প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বৈরাচার সরকারের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, দমন-পীড়ন ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণের কারণে তরুণ শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী বিক্ষোভ দাবানলে পরিণত হয়।
মঙ্গলবার রাতে জাতীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ ৫ আগস্ট, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন। এক বছর আগে এ দিনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। গত বছরের জুনে আদালতের একটি রায়ে সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল হলে দেশের তরুণ শিক্ষার্থী সমাজ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তাদের এই ক্ষোভ দাবানলে পরিণত হয় স্বৈরাচারের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যে, দমন-পীড়ন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, নির্মম হত্যাযজ্ঞের কারণে।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারী শাসকের নির্দেশে পরিচালিত হত্যাযজ্ঞের সামনে নির্ভিকচিত্তে দাঁড়িয়েছিল এ দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। তাদের সম্মুখভাগে ছিলেন আমাদের অদম্য নারীরা। দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে অকাতরে জীবন উৎসর্গ করেছেন তারা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমরা অনেক দূর পথ অতিক্রম করে এসেছি। আমাদের জাতীয় জীবনে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরে এসেছে, অর্থনীতিতে গতিশীলতা এসেছে, সংকট দূর হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা সফলতার সঙ্গে শুল্ক আলোচনা সমাপ্ত করেছি। এর ফলে আমাদের অর্থনীতির সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, যখন এক বছর আগে আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৬ বছর ব্যাপী একটানা ধ্বংসযজ্ঞ এবং লুটপাটে বিধ্বস্ত এক অর্থনীতির দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন কারোরই মনে হচ্ছিল না এই বিধস্ত অর্থনীতিকে আবার সহজে চালু করা যাবে। মাত্র এক বছরের মধ্যে আমরা এতদূর রাস্তা অতিক্রম করতে পারব, যা চিন্তাই করা যায়নি। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবার পালা। আমরা এখন অন্তর্বর্তী সরকার থেকে একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের চার মাসের মাথায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম— ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে দেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করব। তবে নির্বাচনের আগে আমাদের অত্যাবশ্যকীয় কয়েকটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ।
জেএন/এমআর