পাকিস্তানে বৃষ্টি-বন্যায় নতুন করে নিহত ২০

অনলাইন ডেস্ক

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার-পাখতুনখোয়ার স্বাবি জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রবল বর্ষণে নতুন করে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

- Advertisement -

গতকাল সোমবার (১৮ আগস্ট) ব্যাপক বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বহু ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

- Advertisement -google news follower

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, এই বৃষ্টিপাতে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক মানুষ ভেসে গেছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাবির ডেপুটি কমিশনার নসরুল্লাহ খান জানান, হঠাৎ ভূমিধসে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। জেলার পার্বত্য এলাকায় ভূমিধস নেমেছে। গাদুন আমাজাই পার্বত্য এলাকায় বন্যা ও ভূমিধসে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

- Advertisement -islamibank

তবে তথ্য সীমাবদ্ধতার কারণে নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেননি ডেপুটি কমিশনার। যার ফলে পরিসংখ্যানে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

এদিকে প্রাদেশিক সেচমন্ত্রী আকিবুল্লাহ খান বন্যাকবলিত দালোরি সফরে গিয়ে বলেন, প্রবল বর্ষণে ২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং অন্তত ৩৩ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

যদিও প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, ভয়াবহ বৃষ্টিতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২০ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে উদ্ধার তৎপরতা দলের মুখপাত্র বিলাল ফয়েজি বলেন, স্বাবিতে ১১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা গেছে। অন্যদিকে স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী ১৭–১৮ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সরকারি হিসাবে পুরো খাইবার পাখতুনখোয়ায় মারা গেছেন অন্তত ৩৪১ জন। স্থানীয় এক অধিবাসী আমজাদ গুল জানান, দালোরি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা সহজ নয়। মনে হচ্ছে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

অতিবৃষ্টির কারণে জেলার ঘরে ঘরে পানি ঢুকে যায়। মানুষ ছাদে আশ্রয় নেয় বা নিরাপদ জায়গায় সরে যায়। পানি জমে যাওয়া ও ভূমিধস পুরো এলাকায় জনজীবনকে পঙ্গু করে দেয়। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে। ফসল নষ্ট হয়ে যায় এবং রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) চেয়ারম্যান লে. জেনারেল ইনাম হায়দার সোমবার সতর্ক করে বলেন, আগস্টের শেষ পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টির অবস্থা অস্থির থাকবে।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী ড. মুসাদিক মালিকের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এনডিএমএ প্রধান বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে আরও দুই থেকে তিন দফা ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।

সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ নাগাদ শেষ দফার বৃষ্টি শেষ হবে এবং সেপ্টেম্বরের শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

এদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলোতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করতে ফেডারেল মন্ত্রিসভা তাদের এক মাসের বেতন অনুদান দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হবে।

প্রাথমিক হিসাবে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি কমপক্ষে ১২৬ মিলিয়ন রুপি ছাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণসামগ্রীর পরিমাণ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় পর্যায়ে প্রচেষ্টা চলছে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এনডিএমএ প্রাদেশিক সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করছে।

এদিকে সোমবার ইউনিসেফ জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যেই খাইবার পাখতুনখোয়া ও গিলগিত-বালতিস্তানের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ওষুধ পাঠিয়েছে। প্রয়োজনে সরকারের সমন্বিত ত্রাণ কার্যক্রমকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে, যাতে শিশু ও পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ