অনিয়ম ও রাস্তার কাজের গুণগত মান নিয়ে সরাসরি সতর্কবার্তা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি জনগণকে উদ্দেশ করে বলেন, রাস্তার উন্নয়ন কাজে যারা দুই নাম্বারি করে আপনারা তাদেরকে ধরে আমার কাছে নিয়ে আসবেন৷ কোনো দুই নাম্বারি কাজ এখানে হতে দেওয়া হবে না। এখানে সবাইকে কাজের গুনগত মান টিক রাখতে হবে, সাধারণ মানুষের সেটা অধিকার। কোনো ধরনের ভাঙা রাস্তা এখানে থাকতে পারবে না। যারা কাজে তিন চার নম্বর ইট দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা সাবধান। তাদের ব্যাপারে কিন্তু আমি অ্যাকশনে যাব, যদি উল্টোপাল্টা কাজ করা হয়৷
তিনি বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট) দুপুরে নগরীর চর চাক্তাই মনছুর আলী সড়ক এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক ১৯ নং দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের অসহায় দু:স্থদের মাঝে চাল ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ এবং বিএনপির সদস্য ফরম পূরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি দক্ষিণ বাকলিয়ায় দুই শত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করেন। এর আগে তিনি চর চাক্তাই সিটি কর্পোরেশন স্কুল মাঠের উন্নয়ন কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।
বক্তব্যে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গ তুলে ধরে মেয়র বলেন, বাকলিয়াতে আপনারা একসময় দেখেছেন, জলাবদ্ধতা ছিল। ইনশাআল্লাহ এবার জলাবদ্ধতা কমেছে। ৫০-৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতার কাজ আমরা করেছি। আরও ৪০ শতাংশ কাজ বাকি আছে৷ এ কাজগুলো আগামী দুবছরের মধ্যে কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনারা দেখবেন একটা সুন্দর শহর উপহার পাবেন৷ এজন্যই আমি কাজ করে যাচ্ছি। তবে পরিষ্কার শহর করার জন্য আমার সাথে আপনাদেরও কাজ করতে হবে৷ গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি এবং হেলদি সিটি করার জন্য।
রাজনৈতিক ইস্যু তুলে ধরে শাহাদাত হোসেন বলেন, কারা কি করেছে সেটার সবকিছু বেরিয়ে আসবে৷ তাই, সাধু সাবধান! এখানে কেউ মাফ পাবে না। খাজা বাবার দরবার শরীফ হচ্ছে আজমীরে। এখানে বিভিন্ন জায়গায় খাজা বাবার দরবার শরীফ খোলা হয়েছে। এগুলো থেকে সাবধান হন।
বিএনপির রাজনীতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে এখানে কেউ উড়ে এসে জুড়ে বসে না৷ মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার সংগ্রামে সবাই রাজপথ ছিল এবং থাকবে৷ যতক্ষণ পর্যন্ত অধিকার আদায় না হয়৷
তিনি আরও বলেন, আজকে বিভিন্ন দল বিভিন্নভাবে কথা বলছে, আমরা বলতে চাই জনগণ যাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে সেই হবে সংসদ সদস্য। যে অধিকার গত ১৭ বছরে আমরা হারিয়েছি আওয়ামী স্বৈরাচার শেখ হাসিনার, এখন স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ দখল, দেশের মানুষের অধিকার হরণ করার কারণে। কিন্তু আমরা আজ বলতে চাই, এ অধিকার জনগণকে নিশ্চিত করবো। আমরা যাতে তাদের কখা বলার স্বাধীনতা, আইনের শাসন, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পারি। ভোটের অধিকার যাতে ফিরে পায় সেই অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে৷
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে শাহাদাত বলেন, এ অধিকারের জন্য রাজপথে আপনারা দীর্ঘদিন লড়াই করেছেন। আর কিছুদিন লড়াই করতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে যেই নির্বাচন, সেই নির্বাচনে গণতন্ত্রের প্রতীক স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক, জিয়া পরিবারের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে আবারও ক্ষমতায় আনবেন ইনশাআল্লাহ। আপনাদের যে অধিকার আপনারা হারিয়েছেন, সেই অধিকার আমরা ফিরিয়ে দিব।
দক্ষিণ বাকলিয়ার অতীত রাজনৈতিক ভূমিকার কথা উল্লেখ তিনি বলেন, এ দক্ষিণ বাকলিয়া নির্বাচনের সময় সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছে। ২০১০ সালের নির্বাচনে মঞ্জুর আলম সাহেব আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন, ২০ হাজার ভোটে আমরা তিন বাকলিয়া থেকে লিড দিয়েছিলাম। ৭-৮ হাজার ভোট এ দক্ষিণ বাকলিয়া থেকে লিড দেওয়া হয়েছে। পূর্ব পশ্চিমসহ মিলে মোট ২০ হাজার ভোটের লিড দেওয়া হয়েছিল। তাই বাকলিয়া যখন যেটা সিদ্ধান্ত নেয়, তারাই মেয়র হবে এমপি হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সহ সাধারন সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর ইয়াছিন চৌধুরী আসুর সভাপতিত্বে ও মহানগর যুবদল নেতা জসিম উদ্দিনের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা হাজী নবাব খান, ইউনুস চৌধুরী হাকিম, চসিক প্রকৌশলী মাহামুদ সাফকাত আমিন, দক্ষিন বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব ইয়াকুব চৌধুরী নাজিম, সি. যুগ্ম আহবায়ক মো. ইউনুছ, চর চাক্তাই সিটি কর্পোরেশন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানিক বৈদ্য, বিএনপি নেতা নাজমুল হক নাজু, নসুরুল্লাহ খান, শওকত আকবর, এড. হেলাল উদ্দিন, ইয়াকুব খান, রেজিয়া বেগম মুন্নি, সানাউল কাদের চৌধুরী সানি, নুর আলম কালু, মো. খলিল, মো. সোহেল, মো. ফিরোজ, নুরুল আকতার, ফেরদৌস, সালাউদ্দীন বাবলু প্রমুখ।
জেএন/এমআর