চট্টগ্রামের চন্দনাইশে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় মো. হারুন (৩০) নামে আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ নিয়ে এই ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু হলো।
নিহত হারুন চন্দনাইশ হাশিমপুর ইউনিয়নের পূর্ব ছৈয়দাবাদের পদ্মার ডেবা এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।
ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান বলেন, মো. হারুন (৩০) নামে একজন মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এর আগে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মো. সালেহ (৩৩) নামে অপর এক শ্রমিক।
গত বৃহস্পতিবার সকালে চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়নের মাহবুবুর রহমানের মালিকানাধীন গ্যাস সিলিন্ডারের গোডাউনে সিলিন্ডার ‘লোড-আনলোডের’ সময় বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে গোডাউন মালিকসহ ১০ জন দগ্ধ হন।
দগ্ধদের মধ্যে প্রথমদিকে চারজনকে ঢাকার বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করা হয়। তারা হলেন বৈলতলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মাহবুব আলম, একই ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ইদ্রিস (২৭), কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা মো. ইউসুফ (৩০) ও চন্দনাইশ ছৈয়দাবাদের পর্দার ডেবা এলাকার মৃত আবদুল জলিলের ছেলে মো. সালেহ (৩৩) ।
এদের মধ্যে শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ইউসুফ এবং পরের দিন ভোরে ইদ্রিস, দুপুরে মাহবুব এবং সবশেষ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে নয়টায় মারা যান মো. সালেহ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ৩২ বছর বয়সী ইউসুফের শরীরের ৫৭ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। ২৭ বছর বয়সী ইদ্রিসের দগ্ধ হয় ৬০ শতাংশ। ৪৫ বছর বয়সী মাহবুব ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয় এবং মো. সালেহ’র শরীরে ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়।
দগ্ধ বাকি ছয়জনকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক এস খালেদ জানিয়েছেন তাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন।
তিনি বলেছিলেন, “বিস্ফোরণের ঘটনায় তাদের সবারই শ্বাসনালীর ক্ষতি হয়েছে।” সবশেষ গত শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ওই ছয়জনকেও ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করা হয়।
তাদের মধ্যে মো. হারুণ (৩০) ৪৫ শতাংশ, আকিবের (১২) ৩৩ শতাংশ, সৌরভের (২৫) ১৬ শতাংশ, কফিল উদ্দিনের (২৫) ৪৫ শতাংশ, এবং লিটনের (৩০) ২০ শতাংশ পুড়েছে বলে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসরা জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মো. হারুণ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুরাদুর রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ আনার আইনি প্রক্রিয়া চলমান। এর আগে মৃত শ্রমিকদের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।