ভারতের তামিলনাড়ুতে অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ বিজয় থালাপতির র্যালিতে পদদলিত হয়ে ৩১ জন নিহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে ৫০ জনকে কারুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।। এর মধ্যে শিশু রয়েছে তিনজন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানা যায়। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর দ্য হিন্দু
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু তথ্যানুযায়ী, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে বিজয় থালাপতি তার বক্তৃতা সংক্ষিপ্ত করেন এবং পদদলিত হওয়া মানুষকে সহায়তার জন্য পুলিশের কাছে আহ্বান জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, থালাপতির রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগাম (টিভিকে) এর সমর্থকরা ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন।
অপেক্ষা শেষে বিজয় যখন রোডশোতে পৌঁছান তখন ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সময় পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় অভিনেতা ও রাজনীতিক বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে অন্তত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে বলে স্থানীয় হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কারুর জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ডেভিডসন দেবাসিরভাথাম বলেছেন, জনসভাস্থলে আহত কয়েক ডজন মানুষকে ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং আরও কয়েক ডজনকে আনার প্রক্রিয়া চলছে। যে কারণে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগই বিজয়ের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেটরি কাজাগমের সমর্থক ছিলেন। তারা অন্তত ছয় ঘণ্টা ধরে সমাবেশস্থলে বিজয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সমাবেশে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে পৌঁছান বিজয়।
পদদলনে হতাহতের খবর পেয়ে কারুর জেলার সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এম সুব্রাহ্মনিয়ান। এছাড়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন জেলা সচিব ভি সেন্টিলবালাজিকে কারুর জেলার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে স্টালিন লিখেছেন, ‘কারুর থেকে আসা খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমি পদদলিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি লোকজনের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই বলেছে, সমাবেশস্থলে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অনেক মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিজয় আকস্মিকভাবে বক্তৃতা দেয়া শেষ করেন। আহতদের দ্রুত উদ্ধারের পর অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
জনসমাগম ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। এ সময় বিজয় থালাপতির দলের কর্মীরা দুর্ঘটনার আশঙ্কা জানিয়ে শীর্ষ নেতাদের সতর্ক করে দেন। পরে থালাপতি বিজয় আকস্মিকভাবে তার বক্তৃতা শেষ করেন।
পরে তার দলের কর্মীরা প্রচারণা বাস থেকে ভিড় লক্ষ্য করে বোতলজাত পানি নিক্ষেপ করেন। অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষের সহায়তা পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয় বলে দলটির কর্মীরা জানিয়েছেন।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে অ্যাম্বুলেন্সকে ব্যাপক বেগ পেতে হয়েছে। প্রচণ্ড ভিড়ের মাঝে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সমাবেশস্থলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চেন্নাইয়ের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ডিএমকে বিজয়ের দলের নেতাকর্মীদের অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে। একই সঙ্গে থালাপতি বিজয়কে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে দলটি।