বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম ইসরায়েল-হামাস সংঘাতপূর্ণ গাজার পথে যাত্রা শুরু করেছেন। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই যাত্রায় তার হাতে বাংলাদেশের পতাকা দেখা গেছে এবং তার পরিহিত পাঞ্জাবিতে ছিল আবু সাঈদের প্রতিচ্ছবি।
বুধবার (১ অক্টোবর) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একাধিক পোস্টে তিনি নিজেই এসব কথা জানিয়েছেন।
এদিন সন্ধ্যায় দেওয়া তার এক পোস্টে লেখা ছিল, ‘On lower deck of Conscience’ (অর্থাৎ: ‘কনসায়েন্স’এর নিচের ডেকে)। এ পোস্টের সঙ্গে মাঝসমুদ্রে বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিজের একটি ছবিও জুড়ে দেন।
একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মানবিক সহায়তা নিয়ে ভূমধ্যসাগর থেকে গাজার পথে রওনা হয়েছে আন্তর্জাতিক নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। এই নৌবহরে ৪০টিরও বেশি বেসামরিক নৌকা ও জাহাজ রয়েছে। এসব নৌযানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০০ জন নাগরিক রয়েছে। তাদের মধ্যে সংসদ সদস্য, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী এবং সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন। এই বহরে থাকা একমাত্র বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।
সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী— যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা থেকে ১১৮ মাইল দূরে অবস্থান করছে এই নৌবহর। কিন্তু সুমুদ ফ্লোটিলা জাহাজের বহরকে ইসরায়েলের ডুবিয়ে দেওয়ার হুমকির পর তাদের গাজায় পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় আরেক পোস্টে শহিদুল আলম জানিয়েছেন, আমার ‘ড্রোন ওয়াচ’ দেখাচ্ছে- আরও এক ঘণ্টা যেতে হবে, যেখানে আমরা সাধারণত সম্ভাব্য আক্রমণের প্রতি নজর রাখি। আমার ওয়াচে এর আগে একটি তুর্কি জাহাজ দেখা গেছে, তবে এখন পর্যন্ত বিপজ্জনক কিছু ঘটেনি।
এদিকে একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতারা গাজার অবরোধ ভাঙতে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ইতালি ও গ্রিস এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং কনস্যুলার সুরক্ষা প্রদান করে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকার শুক্রাবাদে দৃকপাঠ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম ঘোষণা দেন, গাজা উপত্যকায় চলমান নৃশংসতার বিষয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের নীরবতা ভাঙতে আন্তর্জাতিক সংগঠন ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) উদ্যোগে পরিচালিত ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন রোববার ইতালির উদ্দেশে রওনা হন বাংলাদেশি এ মানবাধিকারকর্মী। আর বর্তমানে রয়েছেন গাজার পথে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার এই নৌবহর ইতোমধ্যে ইসরায়েল ঘোষিত তথাকথিত ‘বিপৎসীমায়’ প্রবেশ করেছে বলে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে জানান শহিদুল আলম। পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এই নৌবহরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
জেএন/এমআর