চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকার একটি বাসা থেকে সোয়া ৭৪ লাখ টাকা মূল্যের ৪৯ ভরি ৮ আনা স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ওই বাসার গৃহপরিচারিকার মেয়েসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এসময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া প্রায় ১৬ ভরি স্বর্ণ এবং স্বর্ণ বিক্রির ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। শনিবার (৪ অক্টোবর) তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সুমাইয়া ইয়াসমনি সাথী (১৯), ইভা বেগম (৩২), হাসেনা বেগম (৬৭) ও শান্তা আক্তার নিলা (২৬)।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর গৃহিনী উম্মুল খায়ের আমিন বাদী হয়ে থানায় স্বর্ণ চুরির মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বাদী জানান, গত ২১ আগস্ট সকালে তাঁর মেয়ে নাবিলা আমিনকে বাসায় রেখে তিনি রাউজান শ্বশুরবাড়িতে যান। বিকেলে ফিরে এসে দেখেন, তাঁর ও প্রবাসী ছেলে মো. ইফতেখার আমিনের ঘরের আলমারীর দরজা খোলা।
এই অবস্থায় আলমারীতে রাখা ৪৯ ভরি ৮ আনা স্বর্ণালংকার (যার মূল্য আনুমানিক ৭৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা) নেই।
বিষয়টি মেয়ে নাবিলা আমিনকে জিজ্ঞেস করলে মেয়ে জানায় ঘটনার দিন তাদের বাসার গৃহপরিচারিকা পারভীন আক্তারের মেয়ে সুমাইয়া ইয়াসমিন সাথী বাসায় আসে এবং দুপুরের পর বেরিয়ে যায়।
দীর্ঘদিনের বিশ্বাসের কারণে সাথী যাওয়ার পর কেউ আর ঘর তল্লাশি করেননি।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সুলাইমান জানান, শনিবার তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থেকে মূল আসামি সুমাইয়া ইয়াসমিন সাথী ও সহযোগী ইভা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।
তাদের দেখানো মতে চোরাই স্বর্ণের কিছু অংশ—আংটি, বাচ্চার চুড়ি, কানের দুল, মালা (ওজন ১৪ আনা), নগদ ৯০ হাজার টাকা এবং বিক্রির টাকায় কেনা দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরে কিশোরগঞ্জের হাসেনা বেগম নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে স্বর্ণ বিক্রির ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়।
তিনি আরও জানান, আসামীর স্বীকারোক্তি মতে নরসিংদীর রায়পুরা এলাকা থেকে শান্তা আক্তার নিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে চোরাই ৩ ভরি ১২ আনা স্বর্ণালংকার, ১ লাখ টাকা এবং বিক্রির টাকায় কেনা আরও দুটি মোবাইল জব্দ করা হয়।
এছাড়াও সুদীপ্ত জুয়েলার্স থেকে ১০ ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের গলানো পাত এবং রতন জুয়েলার্স থেকে ১ ভরি ৮ আনা ওজনের আরেকটি গলানো পাত উদ্ধার করা হয়।
আইনী প্রক্রিয়া শেষে গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী চোরাই স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।