বছর বছর বাড়ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার বকেয়া বিলের পরিমাণ। ৩ বছরের ব্যবধানে বকেয়া বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি। বকেয়া আদায়ে তৎপরতা নেই কারো। হেলেদুলে সময় পার করছেন রাজস্ব কর্মকর্তারা। বকেয়া আদায়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি ওয়াসা।
ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের অক্টোবরে ৫০ খেলাপি গ্রাহকের একটি তালিকা প্রকাশ করে ওয়াসা। স্থানীয় পত্রিকায় এ গ্রাহকদের তালিকাটি প্রকাশ করা হয়। এক লাখ টাকারও বেশি বকেয়া রয়েছে এমন গ্রাহকদের চিহ্নিত করে এ তালিকা তৈরি হয়। তখন সরকারি-বেসরকারি আবাসিক ও অনাবাসিক গ্রাহকদের কাছে ওয়াসার মোট পাওনা ছিল প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ছিল ১৩ কোটি টাকা।
বর্তমানে ওয়াসার মোট বকেয়া ৮০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। তিন বছরের ব্যবধানে বকেয়ার পরিমাণ বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি। এরমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া রয়েছে ২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ব্যক্তিপর্যায়ের গ্রাহকদের কাছে বকেয়া রয়েছে ৫৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ক্রমান্বয়ে তিন বছরের ব্যবধানে তিনগুণের বেশি বকেয়া বাড়লেও, আদায়ে ভূমিকা দেখাতে পারেনি ওয়াসা।
এ বিষয়ে কথা হলে ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক ড. পীযূষ দত্ত জয়নিউজকে বলেন, বকেয়া আদায়ের ক্ষেত্রে সাধারণত ম্যাজিস্ট্রেট মূল ভূমিকা রাখেন। আমরা যাদের বেশি পাওনা আছে তাদের চিঠি দিয়ে ও সাক্ষাৎ চেয়ে কিভাবে তা আদায় করা যায় সে চেষ্টা করছি। আমাদের রাজস্ব কর্মকর্তাদের এলাকায় এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেটকে আরো বেশি জায়গায় যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি।
খেলাপি গ্রাহকদের নাম প্রকাশ সম্পর্কে জানতে চাইলে পীযূষ দত্ত বলেন, তাদের নাম প্রকাশের বিষয়টিও আলোচনায় আছে। আমরা কয়েকটি পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছি। আগে কোনটা কার্যকর হয়, সেটা দেখা যাক।
জানা গেছে, বকেয়া আদায়ে সবসময় তৎপরতার কথা বলা হলেও, বাস্তবে মাঠপর্যায়ে ওয়াসার তেমন কোনো তৎপরতা ছিল না। প্রায় বোর্ড সভায় বকেয়া আদায়ে তৎপরতা এবং মাঠপর্যায়ে আরো দায়িত্বশীলতার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। এরমধ্যে ঢিলেঢালাভাবে কিছু বকেয়া আদায় হয়েছে। তবে বকেয়া আদায়ে কখনোই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি ওয়াসা। সর্বশেষ বোর্ড সভায় (৫০তম) প্রতিমাসে অন্তত ৫০ লাখ টাকা বকেয়া আদায় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর থেকে আবার বকেয়া আদায়ে তৎপরতা শুরু করে ওয়াসা।
কথা হলে ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মাহমুদুল হক বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। আগে বকেয়া বিল কেন কম আদায় হয়েছে, সেটা বলতে পারব না। তবে এরই মধ্যে আমরা বকেয়া আদায়ের জন্য কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে গ্রাহকদের নোটিশ দেবো। এরপর আমরা অন্যান্য ব্যবস্থায় যাব।