যদি সংবাদ বস্তুনিষ্ঠ হয় এবং সংশ্লিষ্ট সংবাদের যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ থাকে তাহলে সাংবাদিকরা মন্ত্রী ও সরকারি আমলার বিরুদ্ধে কোন অনিয়ম পেলে সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। তবে অবশ্যই সে সংবাদের তথ্য সত্য হতে হবে। তথ্য সত্য হলে সাংবাদিকরা যেকোন সংবাদ পরিবেশন করতে পারবেন। সরকার কোন বাধা দেবে না। তবে অসত্য একটি সংবাদ সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। আবার সত্য সংবাদ সমাজ ও রাষ্ট্রের চোখ খুলে দিতে পারে।
রোববার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু হলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার শুরু থেকে সাংবাদিকদের যে দাবি-দাওয়াগুলো আছে সেগুলো সমাধানে আমরা কাজ শুরু করেছি। মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকেই সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ডের কথা তোলা হয়েছে। শনিবার (২৬ জানুয়ারি) সচিবালয় খোলা রেখে মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা করা হয়েছে। সংবাদপত্র মালিকদের দুইটি সংগঠন। সাংবাদিকদের সংগঠন আছে। সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। মূলত আগে পত্রিকাগুলোর জন্যই শুধু ওয়েজবোর্ড ছিল। এখন দেশে বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলের পাশাপাশি অনেকগুলো এফএম রেডিও আছে। সেগুলোর জনপ্রিয়তাও কম নয়। তাই নবম ওয়েজ বোর্ডের মধ্যে এদের সবাইকে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অনলাইন মিডিয়া বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনলাইনের প্রয়োজন আছে। কারণ অনলাইন নিউজের মাধ্যমে সর্বশেষ তথ্য মুহূর্তেই জানা যাচ্ছে। আমিও নিজেও অনেক অনলাইনে নিউজ পড়ি। দেশের অনেক অনলাইন পোর্টাল সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে সংবাদ পরিবেশন করছে। কিন্তু কিছু অনলাইনের এ দায়বদ্ধতা নেই। তারা অসত্য তথ্য পরিবেশন করে প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে। সম্প্রচার নীতিমালা পাস হলে অনলাইনগুলো নিবন্ধন করা হবে। ইতিমধ্যে অনেক অনলাইন সর্ম্পকে তথ্য ও গোয়েন্দা রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এ রিপোর্টের ভিত্তিতেই অনলাইন পোর্টালগুলোর অনুমোদন দেয়া হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও সহযোগিতা লাগবে।
বিগত ১০ বছরে সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ক্ষুধাকে জয় করেছি আমরা। দারিদ্র্যতা ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। ১০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী যা ওয়াদা করেছিলেন সব বাস্তবায়ন হয়েছে। এবারের নির্বাচনের আগে যে ইশতেহার দেওয়া হয়েছে সেগুলোও বাম্তবায়িত হবে।
চট্টগ্রামের প্রতি নিজের দায়বদ্ধতার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের ছেলে হিসেবে এ অঞ্চলের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে ৯ ঘণ্টা সম্প্রচার শুরু হবে। কয়েক মাস পর সেটি ১২ ঘণ্টায় উন্নীত করা হবে। নতুন বছরের শুরুতে বিটিভির দ্বিতীয় টেরিস্টরিয়াল চ্যানেল হিসেবে দেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল বাড়ানো হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে এ তহবিল থেকে সাংবাদিকদের অসুস্থতার পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনা, পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিক নেতাদের পরামর্শও নেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জয়নিউজ চেয়ারম্যা আ জ ম নাছির উদ্দিন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বেও ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনজুর কাদের,বিএফইউজে এর সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল প্রমুখ।