মানুষের হাঁচি, কাশি, সর্দিতে মাখামাখি হওয়া টিস্যু বিক্রি করা হচ্ছে ৭৯.৯৯ ডলার বা প্রায় সাত হাজার টাকায়। কয়েক মাস আগে থেকেই অনলাইনে এগুলো বিক্রি শেষ, তার মানে প্রচুর মানুষ এগুলো কিনেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি কোম্পানি ভায়েভ টিস্যুজ বিক্রি করছে নোংরা ও ব্যবহৃত টিস্যু। চড়া দামের এই টিস্যু কেনার মানুষেরও অভাব হচ্ছে না! ব্যাপারটা কী?
না, এই টিস্যু কোনো সেলেব্রিটির ব্যবহৃত নয় যে এত দাম হবে। এর পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফ্লু সিজন’। বছরের একটি সময়ে সে দেশে প্রচুর মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হন, এর জন্য অনেকে আগে থেকেই ওষুধ খান বা টিকা নেন। ভায়েভ টিস্যু দাবি করছে, সেসব ওষুধ বা টিকার বিকল্প হতে পারে এই টিস্যু। তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ‘বিশ্বাস করুন, মানুষের হাঁচি দেওয়া একটি টিস্যু সুঁই (টিকা) বা ওষুধের চেয়ে নিরাপদ।’
কোম্পানিটি দাবি করে, এই টিস্যুকে ‘অর্গানিক ইনগ্রিডিয়েন্ট’ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে, তা ব্যবহারের জন্য কোনো প্রেসক্রিপশন লাগবে না আর তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কার্যকর করে তুলবে।
কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা, ৩৪ বছর বয়সী অলিভার নিসেন ব্যাখ্যা করেন, ফ্লু সিজন আসার আগেই এই টিস্যু ব্যবহার করলে আপনার ফ্লু হবে, এতে ফ্লু সিজনের আগেই আপনার অসুস্থতা শেষ হয়ে যাবে ও আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ওই ফ্লুকে আর শরীরে ঢুকতে দেবে না।’
ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক চার্লস জারবার মতে, মোটেও এমন কোনো উপকার পাওয়া যাবে না। কারণ প্রায় ২০০ ধরনের রাইনোভাইরাসের কারণে ফ্লু হতে পারে। ওই টিস্যুতে মাত্র এক ধরনের রাইনোভাইরাস থাকবে। ফ্লু সিজনে অসুস্থতা এড়াতে আপনাকে ২০০টি ব্যবহৃত টিস্যু নাকে গুঁজে রাখতে হবে। এতগুলো ভাইরাস আছে বলেই সাধারণ ফ্লুর জন্য কোনো টিকা নেই।
ভায়েভ টিস্যু অনেক মানুষ কিনেছে বটে, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টাও চলছে। টুইটার ব্যবহারকারীরা রীতিমতো বিরক্ত এর উপর। তাকে বেশির ভাগ মানুষই বলছেন ‘ডিজগাস্টিং’।