চট্টগ্রামের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু রাইফা খানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে এ ঘটনায় জড়িত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন ।
এদিকে চিকিৎসার অবহেলায় বা ভুল চিকিৎসায় মারা গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কেন নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
রাইফার বাবা সাংবাদিক মোহাম্মদ রুবেল খান ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ৯ আগস্ট রিট দায়ের করেন। আবেদনের পক্ষে আজ শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ এনাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
জানা যায়, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল), বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি, ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট তিন চিকিৎসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গলার ব্যথাজনিত কারণে ভর্তি হওয়ার পর গত ২৯ মে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ২ বছর ৩ মাস বয়সী শিশু রাইফা। চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু রাইফার মৃত্যুর অভিযোগে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠিত হয়।
ওই কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুটির রোগ নির্ণয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধ প্রয়োগ যথাযথ থাকলেও অভিযুক্ত তিন চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশিষ সেনগুপ্ত ও ডা.শুভ্র দেব শিশুটির চিকিৎসায় কর্তব্যে অবহেলা করেছেন। রাইফার যখন খিঁচুনি হয় তখন তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের ছিল না।
এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেয়া প্রতিবেদনে ম্যাক্স হাসপাতালের নানা অনিয়ম ও ত্রুটি নিয়ে ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। ১৫০ শয্যার এ হাসপাতালে লাইসেন্স নবায়নে ত্রুটি, হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোনো নিয়োগপত্র না থাকা, প্যাথলজি বিভাগ ও চিকিৎসকের কোনো তথ্য নেই বলে জানানো হয়।