প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সঙ্গেও এসব মৃতদেহের কোনো সম্বন্ধ নেই। অথচ মৃত্যুর কয়েকশ’ বছর পরেও মমির মতোই এরা অবিকৃত থেকে গেছে। এদের কখনো ‘মমি’ বলা যায় না।
ক্যাথলিক খ্রিস্টধর্মে ‘দি ইনকরাপ্টিবল বডিজ’ নামেই এরা পরিচিত। তাদের মতে, কোনো রকমের প্রক্রিয়া ছাড়াই এসব মৃতদেহ অবিকৃত থেকেছে। ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, যেসব ব্যক্তি জীবদ্দশায় অতি পূণ্যকর্ম করেছেন, তাঁদের দেহই এমন দশা প্রাপ্ত হয়।
প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে, মৃ্ত্যুর পরে মানব শরীরের অবলোপ অনিবার্য। শেষ পর্যন্ত কঙ্কালটুকুই পড়ে থাকে। কিন্তু এসব পূণ্যাত্মাদের দেহের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তাঁদের দেহ মৃত্যুর শতবর্ষ পরেও অবিকৃত থেকে গিয়েছে। এঁদের সেন্টহুড প্রদান করেছে ভ্যাটিকান।
এখন পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে ২৫০টি ইনকোরাপ্টেড বডির সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১৩২০ সালে প্রয়াত সেন্ট টেরেসা অফ অ্যাভিলা থেকে শুরু করে, ১৩৮০ সালে প্রয়াত সেন্ট ক্যাথরিন অফ সিয়েনা, ১৫৫২ সালে প্রয়াত সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার থেকে ১৮৭৯ সালে প্রয়াত সেন্ট বার্নাদেত অফ লর্ডেসের অবিকৃত দেহ অতি বিখ্যাত।
ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চের মতে, এই ঘটনা একেবারেই অলৌকিক। এখানে ঈশ্বরের মহিমা কাজ করছে।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা মনে করেন, কোনো না কোনো উপায়ে এদের সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেই কারণটি চার্চ উহ্য রাখে।
বিজ্ঞানের সঙ্গে বিশ্বাসের এই সংঘাতকে অবশ্যই গুরুত্ব দেন না ক্যাথলিকরা। তাঁদের মতে, ঈশ্বরই সিদ্ধান্ত নেন কাদের দেহ অবিকৃত থাকবে।
বিষয়টি নিয়ে ‘দি ইনকরাপ্টিবলস’ নামে একটি গ্রন্থ লিখেছেন মার্কিন লেখিকা জোয়ান ক্যারল ক্রুজ। ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত সেই গ্রন্থের জনপ্রিয়তা আজও অমলিন।