চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঠার শিক্ষকের পক্ষে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টে জারি করা রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদি পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদ সরওয়ার জয়নিউজক বলেন, “হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। সেই সাথে হাইকোর্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তি করার আদেশ দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, গত ১৫ জুলাই কলেজে ফেরত যাওয়া নিয়ে ওই ১৮ শিক্ষক হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে ছয় মাসের স্থাগিতাদেশ দেয়। একই সঙ্গে অফিস আদেশটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল ইস্যু করেন আদালত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত (রেজিস্ট্রার) কে এম নুর আহমদ এম এ জয়নিউজক বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। না জেনে কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, গত ১৫ জুলাই হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধ রাখে। শুধু তাই নয় আদালতের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও ওই ইনস্টিটিউটের শিক্ষক নিয়োগের জন্য নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া কোর্টের আদেশের কপি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের হাতে পৌঁছানোর পরও ওই আঠার শিক্ষককে ক্লাস নিতে অনুমতি প্রদান করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এন্ড রিসার্চ (আইআর) সাবেক পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক এম এ জয়নিউজক বলেন, স্থগিতাদেশের অফিসিয়াল কপি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে আসার পরও আমাদের ক্লাসে ফিরতে অনুমতি প্রদান করছে না। এমনকি শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ডে আমাকে না রেখে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় নতুন পরিচালক।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ঈদ উপলক্ষে বেতন বোনাস পেলেও আমারা আঠার শিক্ষকে কোনো বেতন বোনাস প্রদান করছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, গত ২০ ডিসেম্বর ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এন্ড রিসার্চ (আইইআর) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি দল শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শন শেষে (ইউজিসি) শিক্ষকদের আত্তীকরন, ন্যূনতম যোগ্যতা ও ইনস্টিটিউটের আর্গানোগ্রাম নেই বলে অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে ওই শিক্ষকদের পুরনো কর্মস্থল করেজে ফেরত পাঠানোর সুপারিশ করেন।
এরপরে গত ৩১ মে অনুষ্ঠিত ৫১৫তম সিন্ডিকেট সভায় ওই সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে অনুযায়ী ওই শিক্ষকদের ফের বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ফেরত পাঠায়। এর প্রতিবাদে ওই ইনস্টিটিউটের ১৮ শিক্ষকের মধ্যে দুই শিক্ষক পৃথকভাবে হাইকোর্টে রিট করেন।