দেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ হিসেবে খ্যাত কর্ণফুলী নদীর তীর দখলমুক্ত করতে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সদরঘাট থানা এলাকার কর্ণফুলী ঘাট এলাকা থেকে ৩০টি পাকা ভবন ও একটি খালের মুখে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান জয়নিউজকে বলেন, দ্বিতীয় দিনে কর্ণফুলী নদীর পাশে মাঝিরঘাট এলাকায় খালের মুখে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। গুদাম ঘর ও বাজারের মতো অনেক পাকা স্থাপনাও গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিনের ৮০টিসহ মোট ১১০টি ভবন উচ্ছেদ করা হয়েছে।
আগের দিনের মতো মঙ্গলবারও অভিযান পরিচালনা করেন পতেঙ্গা রেঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উচ্ছেদ কার্যক্রমের সমন্বয়ক তাহমিলুর রহমান এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান।
অভিযানে জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করে পুলিশ, র্যাব, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
এর আগে অভিযানের প্রথম দিন সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক কিলোমিটার এলাকা দখলমুক্ত করা হয়েছিল। এসময় ৮০টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে চার একর ভূমি উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে এসব জায়গায় গাছ লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি পিলার ও সতর্কতামূলক সাইনবোর্ডও লাগানো হয়।
এদিকে কর্ণফুলী নদীর তীর দখল করে প্রভাবশালীদের গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করায় হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইলিয়াস হোসেন। তবে কোনো ধরনের হুমকিতে মাথা নত না করে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ, ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের বিচারক কর্ণফুলীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এরপর আরও কয়েকবার অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিলেও সাড়া মেলেনি। ফলে গত দুই বছরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযানও শুরু করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের আশ্বাসে সোমবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।