মান-অভিমান ভুলে একাদশ সংসদে সরব থাকতে চান ১৪ দলের সাংসদরা। শুধু তাই নয়, সরকার পরিচালনায় সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত তাঁরা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠনে ‘একলা চলো নীতি’ গ্রহণ করেছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত ১৪ দলের সাংসদরা অনেকেই পদ পাননি। জানা গেছে, বিএনপির সাংসদরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেননি। তাই ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের নবগঠিত মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি।
সংসদে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদলে ভারসাম্য রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় আওয়ামী লীগ সাংসদ ছাড়া ১৪ দলে থাকা অন্য দলের নেতাদের সরকারের নীতিনির্ধারণী কোনো পদে রাখা হয়নি। এতে শরিকদলে মান-অভিমান ও চাপা কষ্ট এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলের বেশ কয়েকজন এমপিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য করায় তাঁরা খুশি । তবে বাদ পড়া মন্ত্রীদের কেউ কেউ মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা এখনও আশা করেন, আগামীতে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন হলে তাঁদের মূল্যায়ন করা হতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংসদে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে সমালোচনায় সরব থেকে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে চাচ্ছেন তাঁরা।
সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদকে প্রাণবন্ত করতে ১৪ দলের সাংসদদের সরকারের ভুল-ত্রুটি তুলে ধরতে অনুরোধ করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে সরকারের কোনো কাজ পছন্দ না হলে সংসদের ভেতরে ও বাইরে জোরালো বক্তব্য দিতে অনুরোধ করেছেন। এর ফলে ক্ষমতাসীন দল সংসদ পরিচালনার পাশাপাশি সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছ থাকবে ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের জানিয়েছেন, তাঁদের গুরুত্ব সরকারের কাছে আগের মতোই আছে। সংসদকে কার্যকর করতে শরিকদলের সাংসদদের মন্ত্রী করা হয়নি। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় আশ্বস্ত হয়ে সংসদ কার্যকর করতে ভূমিকা রাখতে চান এই সাংসদরা।
এ বিষয়ে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম জয়নিউজকে বলেন, মন্ত্রিত্ব থাকবে কি থাকবে না- এজন্য ১৪ দল গঠন করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের সুযোগ দিয়েছেন। এ কারণে সিনিয়র নেতাদের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যাঁরা বাদ পড়েছেন তাঁরা সবাই সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হয়েছেন। এটা দিয়েই প্রমাণ হয়, প্রধানমন্ত্রী কাউকে বাদ দেননি। সুতরাং এটা নিয়ে মন খারাপের কিছু নেই। ১৪ দলের নেতারা এ বিষয়টি এখন বুঝতে পেরেছেন।
এদিকে ১৪ দলের অন্যতম নেতা সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া জয়নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা ভালো মনে করেছেন, তাই করেছেন। এতে মনে কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই। আর মন্ত্রিত্ব পাওয়ার কিংবা দেওয়ার সময় তো শেষ হয়ে যায়নি। তা হলে এ নিয়ে বিতর্ক কেন!
তিনি আরো বলেন, এখন দেশগড়ার সময়। চাওয়া-পাওয়ার রাজনীতি করেন না দাবি করে তিনি জানান, ১৪ দল আছে ও থাকবে। এখানে কোনো বিভক্তি নেই।
এ বিষয়ে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, সরকারের সঙ্গে থাকলেও যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সরব থাকব। যেখানে যখন সত্য কথা বলা দরকার, সেখানে ১৪ দল বা আমার দল কখনো পিছপা হবে না। কেউ কেউ মনে করছেন, মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি বলে আর জোটের প্রয়োজন নেই। আমি এটা মনে করি না।
জয়নিউজ/আরসি