শ্রদ্ধায় একুশের বীর স্মরণে জাতি

সেদিন ছিল ফাল্গুনের ৮ তারিখ। সকাল ৯টা বাজতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হতে থাকে ছাত্র-জনতা। ঐতিহাসিক আমতলা তখন লোকে লোকারণ্য। ভয় পেয়ে ঢাকার রাস্তায় ১৪৪ ধারা ঘোষণা করে পাকিস্তান সরকার। সেই ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা ভেঙে মিছিল এগোতে থাকে ঢাকা মেডিকেলের দিকে। হঠাৎ মিছিলে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রফিক, জব্বার, সালাম ও বরকত।

- Advertisement -

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিতে রচিত হয়েছিল নতুন ইতিহাস। সেদিন মায়ের ভাষার জন্য বুকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ। বৃথা যায়নি তাদের সেই আত্মত্যাগ। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও বেগবান হয় ভাষা আন্দোলন। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৯ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

- Advertisement -google news follower

আর এই মহান ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে সংযোজিত হয় নতুন এক স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, ‘বাংলাদেশ’।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়ে ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে পৃথিবীর ১৮৮টি দেশে এ দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

- Advertisement -islamibank

রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সেই শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে দেশের আপামর জনতার ঢল নামবে শহীদ মিনারে। ফাল্গুনের বসন্তী ফুলে ছেয়ে যাবে মিনার। খালি পায়ে হেঁটে আসবে প্রভাতফেরি। কণ্ঠে থাকবে সেই চিরচেনা সুর,
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি…’।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সিটি মেয়রের বাণী

একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবার পার করছে ৬৭তম বার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। পৃথক পৃথক বাণীতে তারা সব ভেদাভেদ ভুলে একুশের চেতনায় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে একযোগে দেশ গড়ার কাজ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সারা দেশের মতো বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ। এছাড়া এ উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

জয়নিউজ/জুলফিকার
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM