চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে বদলে গেছে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি)। নগরের সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র টিআইসিকে আধুনিকায়ন ও নান্দনিকরুপে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। ভিতরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি টিআইসির বাইরের অংশেও সবুজায়নের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিকমানের অত্যাধুনিক এক টিআইসির দ্বার খুলতে যাচ্ছে আজ শনিবার (২৩ ফ্রেব্রুয়ারি)।
বিকেল ৪টা থেকেই টিআইসি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। বিকেল ৫টায় শুরু হবে নতুন সাজের টিআইসির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন টিআইসির ‘নব আঙ্গিকে নবযাত্রার’ উদ্বোধন করবেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি। উদ্বোধনের পর হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
টিআইসির আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে কথা হলে মেয়র নাছির জয়নিউজকে বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে নগরের সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্রগুলো। নগরের ৭০ লাখ মানুষের সংস্কৃতিচর্চার জন্য যেতে হয় ডিসি হিল, শিল্পকলা একাডেমি আর মুসলিম হল, এই তিনটি স্থানের যেকোনো একটিতে। নগরবাসীর বিনোদনের জন্য তাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে টিআইসির আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
টিআইসিকে আন্তর্জাতিক মানের একটি আধুনিক মুক্তমঞ্চ হিসেবে গড়ে তোলা হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, টিআইসি প্রাঙ্গণে মানুষের বসার ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গে সৌন্দর্যবর্ধনে সবুজায়ন করা হয়েছে। থাকছে এলইডি লাইটে আলোকায়নের ব্যবস্থা। নগরবাসী এখানে মনোরম পরিবেশে অবসরে আড্ডা দিতে পারবেন।
মেয়র জানান, ভারত সরকার টিআইসির ভিতরে আধুনিকায়নের জন্য ২ কোটি ৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৬ টাকা অনুদান হিসেবে দিয়েছে। এর মধ্যে লিফট, মিলনায়তনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, শব্দ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানো, লাইটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। উদ্বোধনের পর চট্টগ্রামের সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম কেন্দ্র টিআইসি ভিন্নমাত্রা পাবে বলে মন্তব্য করেন মেয়র নাছির।
এদিকে নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার জয়নিউজকে জানান, টিআইসির সংস্কার করা হয়েছে। এখানে মুক্তমঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। থাকছে আন্তর্জাতিক মানের ব্ল্যাক বক্সের ব্যবস্থা। এছাড়া সাউন্ডপ্রুফ হলরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টিআইসিতে প্রবেশের জন্য আরেকটি গেইট করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, টিআইসি প্রথম নির্মাণ করেছিলেন সাবেক মেয়র চট্টলবীর এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী। সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করে এটিকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলছেন গ্রিন এন্ড ক্লিন সিটির রূপকার আ জ ম নাছির উদ্দীন।
আহমেদ ইকবাল আরো বলেন, এর আগে ভারতের অর্থায়নে মিলনায়তনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে এখানে অত্যাধুনিক ভিআরএফ সিস্টেম সংযোজন করা হয়েছে। আগে ৫২ টন এসি ছিল, বর্তমানে বাড়িয়ে ৮২ টন করা হয়েছে। মিলনায়তনে বসানো হচ্ছে নতুন চেয়ার। আগে মিলনায়তনের দুই পাশে চেয়ার, মাঝে দর্শকদের চলাচলের পথ ছিল, এখন চলাচলের পথ হবে দু’দিকে।
লাইটিংয়ের ক্ষেত্রে এলইডির ব্যবস্থা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকল্পে লেকচার হল সংস্কারের উল্লেখ না থাকলেও উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সমন্বয় করে সেটিরও আধুনিকায়ন হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ৭ অক্টোবর টিআইসি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর কার্যক্রম ও আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এটি প্রশংসা কুড়ায়। সম্প্রতি ভারত সরকারের সহায়তা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠানটির আধুনিকায়ন প্রকল্প সম্পন্ন হয়।
জয়নিউজ/জুলফিকার
