চাপের মুখে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকে দেশের সশস্ত্র বাহিনী ও জনতাকে সম্ভাব্য যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকের পরে বিবৃতি দিয়ে ভারত সরকারের দিকে আঙুল তুলে সেই কমিটি বলেছে, ‘‘নির্বাচনের আবহে ঘরোয়া রাজনৈতিক স্বার্থে গোটা অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হল। ভারত অকারণে আগ্রাসন দেখিয়েছে। কখন এবং কোথায় এর জবাব দেওয়া হবে, তা পাকিস্তানই বেছে নেবে।’
সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে পাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আসিফ গফুরও বলেছেন, ‘‘এবার আমাদের জবাবের অপেক্ষা করুক ভারত। কোথায়, কখন তা হবে, সেটা আমাদের অসামরিক নেতৃত্ব ঠিক করবেন। বলা ভাল, ঠিক করে ফেলেছেন।’
বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল কম্যান্ড অথরিটির বৈঠক ডেকেছেন ইমরান। পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারের চাবিকাঠি রয়েছে এ গোষ্ঠীর হাতেই।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটিতে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযান এবং তাতে বহু হতাহতের খবর মানতে চায়নি পাক জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি। তাদের দাবি, ‘আত্মতুষ্টির জন্য আরও একবার বেপরোয়া ও মনগড়া দাবি করছে ভারত সরকার।’ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে পাক সরকারের আহ্বান, কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা, ঘটনাস্থলে এসে যাচাই করে যাক তারা। ভারতের কার্যনির্বাহী হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে ‘সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের’ প্রতিবাদও জানিয়েছে পাকিস্তান।
সাংবাদিক সম্মেলনে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ‘‘এটি নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘনের ঘটনা। আত্মরক্ষার্থে জবাব দেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের আছে।’ কুরেশির দাবি, ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢোকার ‘বহুমুখী চেষ্টা’ চালিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু পাক যুদ্ধবিমানের তাড়া খেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়। সকালে টুইটারে কিছু ছবিসহ একই দাবি করেছিলেন সেনা মুখপাত্র গফুর।
পাক বিদেশমন্ত্রী কুরেশি জানান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির যুবরাজ শেখ মহম্মদ বিন জ়ায়েদ আল নাহয়ান এবং সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সালমনকে টেলিফোনে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন ইমরান। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জ, আইওসি-র মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভারতের ‘নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘনের’ কথা তুলবেন তাঁরা। পার্লামেন্টে অবশ্য ইমরানকে কিছুটা ভরসা দিয়েছেন পিএমএল (এন) আমলের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী খাজা আসিফ। কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তানের সব দলকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন তিনি।