সড়কে শৃঙ্খলা আনতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ এখন হার্ডলাইনে। নগরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে চলছে যানবাহনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই। মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীর হেলমেট না থাকলে ঠুকে দেওয়া হচ্ছে মামলা। ট্রাফিক বিভাগের এমন কর্মতৎপরতায় খুশি নগরবাসীও।
তবে ট্রাফিক পুলিশের এতো কর্মতৎপরতার পরেও নগরের বিভিন্ন স্থানে যানজট এখনো আগের মতই রয়ে গেছে। ট্রাফিক বিভাগ বলছে, যানজট কমাতে সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় দরকার। একা ট্রাফিক বিভাগের পক্ষে নগরের যানজট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
সিএমপি’র ট্রাফিক সূত্র জানায়, গত জানুয়ারি মাসে সড়কে নানা অনিয়মের কারণে বিভিন্ন যানবাহন চালককে মোট ১ কোটি ৫৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকার মামলা দেওয়া হয়েছে। এ সময়কালে মামলা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। আবার এর মধ্যে মোটরসাইকেল আরোহীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার। রাস্তায় আইন অমান্যকারীদের মধ্যে মোটরসাইকেল আরোহীরাই এগিয়ে। চালক ও আরোহীর হেলমেট না থাকা, লাইসেন্স-ডকুমেন্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকা, উল্টো পথে গাড়ি চালানো ও সড়ক আইন না মানাসহ নানা কারণে মোটরসাইকেল আরোহীদের মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান সড়কে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্টরা।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় নগরের চৌমুহনী মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. শেখ রাসেল জয়নিউজকে জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু চালকদেরও সচেতন হতে হবে।
তিনি জানান, মোটরসাইকেল চালকরাই বেশি আইন ভঙ্গ করেন। তাই তাদের মামলাও বেশি। মামলার পাশাপাশি তাদের আমরা সচেতনও করছি, যেন একই ভুল বারবার না করেন। তারা যদি সচেতন হন তাহলে আমাদের কাজও অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এদিকে, সড়কে যানবাহন চলাচলে আগের চেয়ে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরলেও মোড়ের যানজট এখনো রয়ে গেছে। নগরের নিউমার্কেট মোড়, আমতল মোড়, জিইসি মোড়, মুরাদপুর মোড়, দুই নম্বর গেট, প্রবর্ত্তক মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও যাত্রী ওঠা-নামার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) হারুন-উর-রশীদ হাজারী জয়নিউজকে বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিক পুলিশ এখন হার্ডলাইনে। যানবাহন চলাচলে যেকোন অনিয়ম রুখতে ট্রাফিক সদস্যরা তৎপর। তবে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সিটি করপোরেশন, সিডিএ’র মতো সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ভূমিকা রাখতে হবে। নগরের অনেক প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই। স্বাভাবিকভাবে তাদের গাড়িগুলো সড়কের উপর রাখে। এ ব্যাপারে আমরা চালকদের বলেছি, আরোহীকে নামিয়ে দিয়ে তারা সেখান থেকে চলে যাবে। আবার আরোহীকে নেওয়ার সময় ফিরে আসবে। এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে নগরের যানজট অনেক কমে যাবে।