লালদিঘীর দক্ষিণ পাড়ে ছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পাবলিক লাইব্রেরী। চসিকের এ লাইব্রেরি চট্টগ্রামের সবচেয়ে দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান বইয়ের সংরক্ষণশালা হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এই জায়গায় চসিকের দশতলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। ভবনটি নির্মিত হলে সেখানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাবলিক লাইব্রেরিটি প্রতিস্থাপন করা হবে। আর ভবনটির কার্যক্রম শুরু হলে এখানেই হবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্থায়ী কার্যালয়।
শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল ১০টায় নগরের মিউনিসিপাল মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উদ্বোধকের বক্তব্যে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন তার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
মেয়র বলেন, ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে চসিকের পাবলিক লাইব্রেরি এই ভবনে প্রতিস্থাপন করা হবে। চট্টগ্রামে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্থায়ী কার্যালয় করা হলে এখানকার বই পড়ুয়াদের মাঝে নতুন উদ্যম সৃষ্টি হবে। সমাজে বইপড়ুয়া যত বাড়বে সমাজ তত আলোকিত হবে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, পারস্যের রাজদরবারে বিশ্বজয়ী সম্রাট আলেকজান্ডার উপস্থিত হয়ে যখন সবার সঙ্গে ভদ্র, বিনয়ী, সুন্দর আচরণ করতে লাগলেন, তখন দরবারের পন্ডিত ব্যক্তিরা তাকে প্রশ্ন করলেন, আপনি এত সুন্দর, ভদ্র ব্যবহার কার কাছ থেকে শিখলেন?
জবাবে আলেকজান্ডার বলেন, আমি বেয়াদবের কাছ থেকে ভদ্রতা, বিনয়ী, আদব শিখেছি। বেয়াদব-অভদ্ররা যা করে আমি সবসময় তার উল্টোটা করতে চেয়েছি।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, সমস্ত পশু একরকম। কিন্তু মানুষ হচ্ছে দুই রকম। উচ্চতর আর নিম্নতর। বই মানুষকে উচ্চতর মানুষ হতে শেখায়। উচ্চতর মানুষের আমরা নাম দিয়েছি আলোকিত মানুষ।
পরে চট্টগ্রামের ৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫২১০ জনকে বইপড়া কর্মসূচির পুরস্কার প্রদান করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
প্রথম পর্বে ২ হাজার ৬০৬ জনকে এবং দ্বিতীয় পর্বে ২ হাজার ৬০৪ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম, চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাহেদুল কবির, গ্রামীণফোনের রিজিওনাল হেড অব অপারেশন ফিরোজ উদ্দিন, মহানগর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক আলেক্স আলীম ও ছড়াকার অরুণ শীল।