মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর জাতিগত নিধন অভিযানের প্রতিবাদে দেশটির কয়েকজন সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং দুটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার (১৭ আগস্ট) মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরোপিত এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
গত বছরের ২৫ আগস্ট কয়েকটি পুলিশ পোস্টে বিদ্রোহীদের হামলাকে অজুহাত করে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বর্বর সাঁড়াশি অভিযান চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এতে ২৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহত এবং কয়েক লাখ আহত হয়েছে। আর জীবন বাঁচাতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সহিংসতাকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে অভিহিত করে ওয়াশিংটন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক কমান্ডার অং কিয়াও জ, খিন মং সোয়ে ও খিন হ্লাইং এবং সীমান্ত পুলিশের কমান্ডার থুরা স্যান লইনের বিরুদ্ধে ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩৩ ও ৯৯ পদাতিক ডিভিশনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
কিন্তু মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এমনকি তাদের এই নৃশংসতাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ কিংবা গণহত্যা বলেও অভিহিত করেনি ওয়াশিংটন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, শুক্রবারের নিষেধাজ্ঞায় যদিও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জেনারেলরা রয়েছেন, কিন্তু দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থেকে যাচ্ছেন।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনী যে সহিংসতা চালিয়েছে তার ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ২৫ আগস্ট রক্তাক্ত ওই অভিযানের এক বছর পূর্ণ হবে এবং ওইদিন এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সমালোচকদের অভিযোগ, রোহিঙ্গা সংকটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি।
তবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক রিচ ওয়ের শুক্রবারের মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বিলম্বিত পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন।
জয়নিউজ/আরসি