পরীক্ষার হল থেকেই ফেসবুক লাইভ শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গের এক ছাত্রী। লাইভে দেখা যায়, আশপাশে বেঞ্চে পরীক্ষা দিচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। মোবাইলের পর্দায় ভেসে উঠছে উত্তরপত্র। পরে বাইরে থেকে দেখে জানানো হলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। শেষ পর্যন্ত মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ওই ছাত্রী। তবে তাকে আরো বড় শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি শনিবারের। স্নাতক তৃতীয় বর্ষের টেস্ট পরীক্ষায় এমন কাণ্ড নিয়ে দিনভর সরগরম ছিল ভারতের পূর্ব বর্ধমানের কালনা কলেজ।
পরে অভিযুক্ত ছাত্রীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। কীভাবে ওই ছাত্রী মোবাইল নিয়ে ঢুকলেন, কয়েক মিনিট ধরে ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পাঠানো সত্ত্বেও কেন তা শিক্ষকের নজরে পড়ল না- সে প্রশ্ন উঠেছে। বিকেলে বৈঠকে বসে কলেজের পরিচালনা সমিতি।
কলেজের অধ্যক্ষ তাপস সামন্ত জানান, ছাত্রীটি মোবাইল লুকিয়ে পরীক্ষার হলে ঢুকেছিলেন। তিনি ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছেন। তবে তাঁকে ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার সুপারিশ করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
আনন্দবাজারে খবরে জানানো হয়, দুপুর ১২টা থেকে পাস কোর্সের ‘এডুকেশন’ পরীক্ষা শুরু হয়। তার মিনিট পনেরো পরেই ওই ছাত্রী ‘ফেসবুক লাইভ’ শুরু করেন। তাঁর বন্ধু-তালিকায় থাকা অনেকেই তাতে অবাক হয়ে যান। কেউ এ সব বন্ধ করে পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেন, কেউ লেখেন, ‘এটাই দেখার বাকি ছিল’। এরই মধ্যে কেউ কলেজে ফোন করে বিষয়টি জানান।
ঘটনা চাউর হতেই অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন টিএমসিপি সমর্থকেরা। তাঁদের বক্তব্য, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল রুখতে উচ্চ মাধ্যমিকে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। কলেজের পরীক্ষায় নজরদারির অভাব থাকবে কেন, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা না হলে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও হতে পারে।’’
বিকেলে পরিচালনা সমিতির বৈঠক ডাকেন অধ্যক্ষ। কালনা থানার এক প্রতিনিধিও যোগ দেন। ছাত্রীর মা কলেজে গিয়ে মেয়ের তরফে ক্ষমা চান। ছাত্রীটি পরে বলেন, ‘‘মজা করতে গিয়ে এমন করে ফেলেছি। আর এই ভুল করব না।’’