নগরকে যানজটমুক্ত ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) প্রতিদিনই চালাচ্ছে উচ্ছেদ অভিযান। কিন্তু এতে করেও দখলমুক্ত হচ্ছে না ফুটপাত। সকালে চসিকের ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পর বিকেলের আগেই আবার দখল হচ্ছে ফুটপাত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনা করার দুই এক ঘণ্টার মধ্যেই আবার দখল হচ্ছে ফুটপাত ও রাজপথ।
অভিযোগ, চসিকর ম্যাজিস্ট্রেট সকালে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও বিকেলের পর কাজীর দেউড়ি আউটার স্টেডিয়ামের ফুটপাত দখলে নেয় চায়ের দোকানদারা। এতে নষ্ট হচ্ছে আউটার স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য। হারাচ্ছে ফুটপাতের নান্দনিকতা। হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে সাধারণ পথচারীর।
ক্লিন এন্ড গ্রিন সিটির রূপকার নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দীন নগরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নগরের সৌন্দর্যবর্ধনে কাজ করছেন। অথচ স্থানীয় বড়ভাই-ছোটভাই এবং কিছু চাঁদাবাজ ফুটপাতে হকার বসিয়ে নগরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে এবং হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকার চাঁদা।
নগরের সার্কিট হাউজের বিপরীতে আউটার স্টেডিয়ামের ফুটপাত। কাজীর দেউড়ি ফুটপাতের উপর পুলিশ বক্স। অথচ দেখেও দেখে না পুলিশ। জানা যায়, পুলিশ বিটের লোকজন চাঁদা নিচ্ছে চায়ের দোকান থেকে। আজ দেখেও বোঝার উপায় নেই, এই ফুটপাতে মাত্র ক’দিন আগে হকার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে চসিক ।
এই এলাকায় ফুটপাতে চা বিক্রেতা রাজু জয়নিউজকে জানায়, ‘সকালে একবার বসছিলাম। তখন চসিকের ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে সবাইকে উচ্ছেদ করে। বিকাল ৩টার পর আবার বসছি।’
রাজু ছাড়াও এখানে ফুটপাতে চায়ের দোকান বসায় কবির, সোহেল, জাহাঙ্গীর, শাহজাহানরা। তারা জানায়, চায়ের দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে একটি চক্র। উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার এবং স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌস হকার উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
আউটার স্টেডিয়ামে প্রায় ঘুরতে আসা অভি জয়নিউজকে বলেন, মাত্র ক’দিন আগে ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করতে দেখেছি। এই অভিযান পরিচালনা করেন সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট। ক’দিন না যেতেই ফুটপাতে আবার একটু পর পর চায়ের দোকান।
তিনি বলেন, আউটার স্টেডিয়ামের ফুটপাতের নান্দনিক সৌন্দর্য ধরে রাখতে এই হকারদের জরিমানার পাশাপাশি বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত করতে হবে। তাহলে এরা আর ফুটপাত দখলে সাহস পাবে না ।
এ ব্যাপারে চসিক ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস জয়নিউজকে বলেন, নগরের ফুটপাতে পথচারীদের হাঁটাচলা নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে সব অবৈধ স্থাপনা ও ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হচ্ছে। চসিকের উদ্যোগে প্রতিদিন নগরের কোনো না কোনো স্থানে অভিযান চলছে।
সকালে অভিযান চালিয়ে হকার উচ্ছেদ হলেও বিকেলে হকাররা ফিরে আসছে, বিষয়টি উত্থাপন করলে তিনি জানান, প্রয়োজনে ওইসব এলাকায় পুনরায় অভিযান চালানো হবে। তবে জনসচেতনতা না এলে নগরের সৌন্দর্য রক্ষা পাবে না বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ফিউশন ডিজাইনার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের পরিচালক এম এ হোসাইন বাদল জয়নিউজকে বলেন, কোটি টাকা ব্যয়ে নান্দনিক ফুটপাত নির্মাণ হয়েছে। চসিক ম্যাজিস্ট্রেট কিছুদিন আগে সকালে ফুটপাত দখলমুক্ত করলেও, বিকেলে আবার চায়ের দোকানদাররা ফুটপাতে বসে যায়। আমি সিটি মেয়র ও প্রশাসনকে এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তাহলে ফুটপাতের সৌন্দর্য রক্ষা পাবে।