বিশ্ব কিডনি দিবস আজ। ‘সুস্থ কিডনি, সবার জন্য সর্বত্র’ এ প্রতিপাদ্যে এ বছর দিবসটি পালিত হচ্ছে। সারাবিশ্বে কিডনি রোগ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার দিবসটি পালিত হয়।
দেশে ৫০ হাজার শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর বাইরে আরো দেড় কোটি বিভিন্ন বয়সী মানুষ কিডনি জটিলতায় ভুগছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচজন কিডনিজনিত রোগে মারা যায়। এত অধিকসংখ্যক মানুষ কিডনি জটিলতায় ভুগলেও, খুব কম লোকই এ বিষয়ে সচেতন।
তারা জানান, কিডনি এমন একটি অঙ্গ, যেটির ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বিকল না হলে লক্ষ্মণ প্রকাশ পায় না। কিন্তু নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে তা শনাক্ত করা যায়। চিকিৎসকদের পরামর্শ, বছরে অন্তত দুইবার কিডনি পরীক্ষা করে জেনে নেওয়া উচিত- আপনার কিডনি কেমন আছে।
বাংলাদেশে দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটিকে সামনে রেখে বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন, কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ক্যাম্পাস, ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। প্রদত্ত বাণীতে রাষ্ট্রপতি প্রতিকারের পাশাপাশি কিডনি রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি খুবই জরুরি উল্লেখ করে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল রোগীদের সহায়তায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
প্রদত্ত বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কিডনি রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ বরেন।
কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেছেন, যাদের ডায়াবেটিস আছে, যারা অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও নিয়ন্ত্রণ করেন না, যাদের বংশগত কিডনি রোগ রয়েছে, যারা ধূমপান ও মাদক সেবন করেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন- তাদের কিডনি জটিলতা হতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু নেফ্রোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোলাম মাঈনউদ্দিন জানিয়েছেন, শিশুদের গলাব্যথা, জ্বর ও ত্বকে খোস-পাঁচড়ার দ্রুত চিকিৎসা করা উচিত। এসব রোগ থেকে কিডনি প্রদাহ ও নেফ্রাইটিস হতে পারে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিডনি সুস্থ রাখতে বেশি করে শাক-সবজি খাওয়া (রান্নার আগে বেশি করে ধুয়ে নেওয়া), বেশি করে ফল খাওয়া, খাবারে কাঁচা লবণ না খাওয়া ও লবণের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন না করা উচিত।
অ্যাপোলো হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন, ভেজাল খাদ্য, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ, ঘন ঘন ইউরিন ইনফেকশন ছাড়াও বিভিন্ন কারণে ঘরে ঘরে এখন কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিডনি রোগের চিকিৎসায় ডায়েটের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
জয়নিউজ/অভিজিত/আরসি