বাংলাদেশে এলে বিদেশি দলগুলোকে যে ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয় সেটা তাদের দেশে সফরে গেলে পাওয়া যায় না বলে অনুযোগ করেছেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন।
নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুলিশের ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হওয়াতেও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে পৃথক হামলায় দুই বাংলাদেশিসহ অন্তত ৪৯ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে হ্যাগলি ওভাল মাঠের কাছের মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের কয়েকজন ক্রিকেটার। কিছুটা দেরিতে সেখানে যাওয়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পান তারা।
সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট বাতিল করে বাংলাদেশ দলকে দ্রুত দেশে ফেরানোর খবর জানানোর সময় পুরো বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে কথা বলেন বিসিবি প্রধান।
গুলশানের নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে পাপন বলেন ক্রাইস্টচার্চের এরকম ঘটনায় প্রস্তুত ছিল না সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আমাদের দেশে কেউ যখন আসে, তখন ওরা যে ধরনের নিরাপত্তার কথা বলে, যে ধরনের নিরাপত্তা দিতে হয় তাদের আমাদের, আমরা এখন পর্যন্ত এমন কিছু (নিরাপত্তা) পাইও নাই। সত্যি কথা বলতে আমরা এটা (নিরাপত্তা) নিয়ে জোরাজোরিও করি নাই। অন্যান্য দেশেও দেখেছি কেউ করেও না।
আপনি যদি পুরো জিনিসটা দেখেন, নিউজিল্যান্ড কিন্তু, আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে এমন কোনো ধারণাই তাদের নাই। ওইখানে পুলিশের যে সময়টা লেগেছে, এটাই তো অবাক করার মতন। আমার মনে হয় না আমাদের দেশে বা আশেপাশের কোনো দেশে এমন কিছু হলে পুলিশ আসতে এত সময় লাগত। তো অবশ্যই আমার মনে হয়েছে ওরা হয়তো অপ্রস্তুত ছিল।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিষবাষ্প পুরো বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার ব্যাপারে সব দেশকেই সমান গুরুত্ব দেওয়ারও আহ্বান তার, আমার মনে হয় প্রত্যেকটা দেশকেই এখন সতর্ক হতে হবে। প্রত্যেকটা দলকেই আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। ওদের হয়তো ধারণা থাকতে পারে এটা হয়তো উপমহাদেশে হতে পারে। ওদের এখানে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ জিনিসটা কিন্তু এখন আর নেই।
নিউজিল্যান্ডের মতো ‘নিরাপদ’ দেশে এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ায় এবার থেকে যেকোনো সফরেই নিরাপত্তার ব্যাপারে বাড়তি ব্যবস্থা নিশ্চিতের কথাও জানান বিসিবি প্রধান, নিরাপত্তা যে রকম থাকার কথা ছিল (নিউজিল্যান্ডে) বা আমরা যেমন দিয়ে থাকি, ধারে কাছেও ছিল না। এবং এটা এখানে না। শুধু এখানে না, আমরা যে জায়গাই সফর করতে যাই আমরা তেমন কোন নিরাপত্তা দেখি না।
এদিকে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে বন্দুকধারীতে হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে দুইজন বাংলাদেশিও রয়েছেন বলে জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের কনসাল শফিউর রহমান।
তিনি জানান, নিহতদের একজন হলেন কৃষিবিদ ড. আবদুস সামাদ। তিনি ক্রাইস্টচার্চের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। এর আগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তার স্ত্রীরও সন্ধান পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।
মিসেস হোসনে আরা ছবি নামে আরেক বাংলাদেশির নিহত হওয়ার খবর দিয়েছেন বাংলাদেশের কনসাল শফিউর রহমান।
এছাড়া আট বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।