নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, যে যাই উপার্জন করেন না কেন, ইন্সুরেন্সের প্রয়োজন আছে। দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন। বড় কোনো রোগে ভুগবেন না, সেটাও বলা যায় না। আজকে আমি ভালো অবস্থানে আছি, কালকে খারাপ অবস্থাও হতে পারে। এজন্য বীমা প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। বীমায় বিনিয়োগ শতভাগ নিরাপদ।
শনিবার (১৬ মার্চ) নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে দুই দিনব্যাপী বীমা মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগরপিতা বলেন, মানুষের আয় কত সেটা বড় কথা নয়, সঞ্চয় কত সেটাই বড়। অনেকে কম আয় করেও সঞ্চয় বেশি করে। সঞ্চয় মানুষের জীবনে অপরিহার্য। কখন কি হয় বলা যায় না। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় বড় সঞ্চয়ে পরিণত হয়। একসঙ্গে বড় বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়।
তিনি আরো বলেন, বীমার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতা আছে। যারা বীমার সঙ্গে জড়িত তারা ছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার সংকট আছে। সাধারণ মানুষকে বীমা করার জন্য রাজি করাতে বীমাকর্মীদের অনেক কথা বলতে হয়। এখন ধীরে ধীরে আস্থা ফিরছে। লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্রে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। যত সহজে বীমা দাবি পরিশোধ করা যাবে তত বেশি সহায়তা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি মানুষ বীমা করতে আগ্রহী হবে।
মেয়র নাছির বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল উন্নত জাতি ও সমৃদ্ধ দেশ প্রতিষ্ঠা। মানুষের ভাগ্য ও জীবনমানের উন্নয়ন। সে লক্ষ্যে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সঠিক পথে এগুচ্ছে দেশ। সোনার বাংলা গড়ার পথে এগিয়ে চলছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। দারিদ্রতা কমতে শুরু করেছে। এখন দারিদ্রের হার ২১ শতাংশে নেমে এসেছে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইডিআরএ সদস্য বোরহান উদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক রুবিনা হামিদ, বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স ফোরামের সভাপতি বিএম ইউসুফ আলী। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আইডিআরএ নির্বাহী পরিচালক খলিল আহমেদ।
বোরহান উদ্দীন আহমেদ বলেন, বীমায় সমস্যা হচ্ছে আস্থাহীনতা। ধীরে ধীরে সেটা বেড়ে উঠতে থাকে এমন সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্ত হাতে বীমা সেক্টরের হাল ধরেন। গঠন করেন আইডিআরএ। ২০১৮ সালে আমরা দশ হাজারের উপর অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছি। কোনো সমস্যা হলে অতি দ্রুত নিষ্পত্তি করে থাকি। আশা করছি বীমাকে আমরা আস্থাহীনতা থেকে আস্থায় নিয়ে আসতে পারবো।
অধ্যাপক রুবিনা হামিদ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বীমার বিভিন্ন ধরনের পণ্য আছে। আমাদের দেশে নানা সমস্যায় আমরা সেগুলো চালু করতে পারিনি। ব্যতিক্রমী পণ্যগুলো নিয়ে আসতে পারলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো।
বিএম ইউসুফ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বীমা সেক্টরের উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বীমা আইন পাস করেন। যুগোপযোগী আইন হয়েছে। বীমা সেক্টরে লাখ লাখ বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। এ পর্যন্ত বীমা সেক্টরে ২২ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। আরো ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে।
খলিল আহমেদ বলেন, বর্তমানে দুই কোটি লোক বীমার আওতায় এসেছে। শুক্রবার বীমা মেলার প্রথম ৬ কোটি টাকার নতুন পলিসি খোলা হয়েছে। ২ দিনে ৮ কোটি টাকার বীমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী স্টলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। র্যালিতে সুশৃঙ্খল ও সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা করা হয়। এগুলো হলো পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স সার্ভেয়াস অ্যাসোসিয়েশন। তাছাড়া সেরা স্টল হিসেবে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, প্রাইম লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, গ্রিন ডেল্টা ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং ইস্টার্ন ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।