সবুজ মিয়া ও আসমা বেগম। ভ্রাম্যমাণ এক দম্পতি। আজ এই শহরে তো কাল ওই শহরে। আজ এই জেলায় তো কাল ওই জেলায়। তাদের বছর কাটে জেলাঘুরে। বছরজুড়ে জেলায় জেলায় ঘুরেন আর মামলা করেন! মামলার কাহিনী কাকতালীয়ভাবে প্রতিবারই এক।
প্রতিবারই স্ত্রী আসমা ধর্ষণের শিকার হন আর স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেন। হোটেল বয় থেকে শুরু করে হোটেল মালিক, বাড়ির দারোয়ান থেকে শুরু করে বাড়ির মালিক প্রত্যেকেই আসমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে আর বাদী হয়ে মামলা করেন স্বামী সবুজ মিয়া। পাহাড় থেকে সমতলে সমানতালে মামলা করেছেন এই দম্পতি।
বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) কোতোয়ালি থানায় এসেছিল তারা দুইজন।
অভিযোগ করে, হোটেল লালদীঘির এক বয় আসমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের অভিযোগের সাথে মুখের অভিব্যক্তির সাদৃশ্য না থাকায় সন্দেহ হয় তাদের। এরপর তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শেষে শিকার করে তাদের ভয়ঙ্কর প্রতারণার কথা।
ভয়ঙ্কর প্রতারণার এমন ঘটনাগুলো নিজের ফেসবুক ওয়ালে দিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন। বাকি ঘটনাগুলো হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
ভয়ঙ্কর এই প্রতারক দম্পতি জানায়, তারা এমন ভয়ঙ্কর প্রতারণা করে আসছে সেই ২০০৫ সাল থেকে। তারা প্রথমে কোন মধ্যম মানের হোটেলে যান। সেখানে বাইরে যাবেন বলে চাবি ম্যানেজারের কাছে দিয়ে যান। এরপর এসেই অভিযোগ করে বসেন, আমাদের রুমে নগদ টাকা রাখা ছিল তা পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রাথমিকভাবে হোটেলেই মালিকের মধ্যস্থতায় মোট অংকের টাকার বিনিময়ে আপোষ করে ফেলেন। কিন্তু প্রাথমিকভাবে আপোষে না আসলে সেই হোটেলের মালিক কিংবা বয়ের বিরূদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তোলে। মামলা করে থানায় গিয়ে। এরপর আদায় করে মোটা অংকের টাকা। তাদের এমন ভয়ঙ্কর মামলা পেয়েছি ঢাকা, বাগেরহাট, নেত্রকোণা এবং রাঙামাটিতে।
মামলা করে এদের প্রত্যেকের কাছ থেকেই হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা। মাস ছয়েক আগে স্টেশন রোডের একই হোটেলেও একই কায়দায় হাতিয়ে নিয়েছে ১২ হাজার টাকা। তারা জানায়, এক জেলায় বেশী মামলা করলে সন্দেহ করতে পারে তাই এক জেলায় তারা বেশীদিন থাকে না। চট্টগ্রামেও বেশী দিন থাকতো না। দুয়েকটি মামলা করেই অন্য জেলায় সটকে পড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু চট্টগ্রামেই আপাতত দাঁড়ি পড়ল ভয়ঙ্কর এই দম্পতির ভয়ঙ্কর প্রতারণার।