আট মাসের ছেলেকে কোলে বসিয়ে কলা খাওয়াচ্ছিলেন বাবা। হঠাৎই গিলতে গিয়ে শিশুটির শ্বাসনালীতে তা আটকে যায়। ছোট্ট শিশু বোঝাতে পারেনি কষ্ট। ছটফট করতে শুরু করে সে। পরিজনেরা বুঝতে পারেন শিশুর শ্বাসনালীতে খাবার আটকে গেছে। তৎক্ষণাৎ মুখে আঙুল দিয়ে কলা বের করার আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু তা-ও আটকে যাওয়া কলা বের করা যায়নি। অবশেষে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কয়েক মিনিট অক্সিজেন দেওয়ার পরেই মৃত্যু হয় ওই শিশুর।
করুণ এই ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে কলকাতার পর্ণশ্রী থানা এলাকার অরবিন্দ পল্লিতে। মৃত শিশুর নাম অঙ্কিত সাউ।
আগেও কলা খাওয়ানো হয়েছিল অঙ্কিতকে। কিন্তু কোনো অসুবিধা হয়নি।
এদিন চোখের সামনে ছেলের এমন পরিণতি দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন অঙ্কিতের মা পুনম সাউ এবং বাবা প্রদীপ সাউ। কিছুক্ষণ হাসপাতালে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁদের। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশাহারা গোটা পরিবার।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে যখন অঙ্কিতকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন শিশুটি প্রায় নেতিয়ে পড়েছিল। কিছুক্ষণ অক্সিজেনও দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ দম আটকে থাকায় বাঁচানো যায়নি অঙ্কিতকে।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের কলা খাওয়ানো যায়। তবে এত ছোট শিশুর ক্ষেত্রে বাড়তি সাবধানতা নিতেই হবে। অসাবধান হলে জলের এক বিন্দুও শ্বাসনালীতে ঢুকে বিপত্তি ঘটাতে পারে। সেখানে কলা বা খাবারের অংশ আটকে যাওয়া তো অনেক বড় বিষয়।
চিকিৎসকরা আরো বলেন, যে কোনো খাবার পুরো চটকে তরল করে নিতে হবে। অল্প অল্প করে শিশুর জিভে দিতে হবে। বাচ্চা খেতে না চাইলে জোর করা উচিত নয়। অনেকে মনে করেন, বাচ্চা কাঁদতে কাঁদতে খেয়ে নেবে। কিন্তু খাওয়ার সময়ে কাঁদলে খাবার দেবেন না। কারণ কান্নার পরে শিশু যখন শ্বাস নেবে, তখন কলা বা খাবারের অংশ শ্বাসনালীতে ঢুকে যেতে পারে।