মহান স্বাধীনতা দিবস আজ। বাঙালি জাতির বিশেষ এই দিনটিকে ঘিরে প্রতি বছরের মতো এবারও ব্যতিক্রমী কিছু আয়োজন নিয়ে হাজির হয়েছে দেশের প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমগুলো।
পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন, ছিল বিশেষ সংখ্যাও। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে চলছে দিনব্যাপী নানা আয়োজন। এফএম বেতারে বাজছে দেশের গান। দিবসটি সাড়ম্বরে স্মরণে বাদ যায়নি দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন পোর্টালগুলোও।
বিশেষ দিনের বিশেষ এই আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি উঠে এসেছে স্বাধীনতার ৪৮ বছরে দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও সমৃদ্ধির আলেখ্য।
দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকগুলোর উপরের অংশের ডিজাইনে (মাস্ট-হেড) লাল-সবুজের আবহে বিশেষ পরিবর্তন ছিল চোখে পড়ার মতো।
জাতীয় দৈনিকে ভিন্নধর্মী আয়োজন
দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বিশেষ সংখ্যার পাশাপাশি প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু বিশেষ প্রতিবেদন। এক্ষেত্রে পত্রিকাগুলোর সম্পাদকীয় নীতি অনুযায়ী দিবসের আয়োজনে বেশ বৈচিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
প্রথম আলোর প্রধান খবরের শিরোনাম ছিল ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বড় কাজ ও গবেষণা নেই।’ পাশাপাশি পত্রিকাটিতে তিন কলামে প্রকাশিত হয় ‘রাজারবাগে স্বাধীনতার প্রথম বুলেট।’ এছাড়া জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ‘নতুন উষার অভ্যুদয়’ শিরোনামে একটি বিশেষ লেখা ছিল পত্রিকাটির প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম কলামে বর্ষীয়ান রাজনীতিক তোফায়েল আহমেদ লিখেছেন ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই।’ দেশের শীর্ষস্থানীয় এই দৈনিকটির প্রধান প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘সমৃদ্ধির পথে দেশ, কমেনি বৈষম্য’ । একইসঙ্গে উন্নয়নধর্মী ‘শিল্প বিপ্লব ঘটাতে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ শিরোনামের একটি বিশেষ প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি।
সমকালের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘ঘুরে দাঁড়ানোর ৪৮ বছর।’ সঙ্গে ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমানের ‘উন্নয়নের দ্বিতীয় অধ্যায়টা সামনে আনা জরুরি’ ও অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশের ‘উচ্চ প্রবৃদ্ধির পেছনে তিনটি বিপ্লব কিন্তু তিন সীমাবদ্ধতা’ শিরোনামে দুটি বিশেষ লেখা। পত্রিকাটির প্রথম পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার তারবার্তাকে উপজীব্য করে ‘দুর্লভ দলিলটি প্রধানমন্ত্রীকে দিতে চান রোকেয়া চৌধুরী’ শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।
যুগান্তরের প্রথম সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘লাখো প্রাণের বিনিময়ে বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন।’ পত্রিকাটি ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর: মাথাপিছু জাতীয় আয় ১৫ গুণ বেড়েছে’ শিরোনামে একটি উন্নয়নধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
কালের কণ্ঠ বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘জটিল আবর্তে মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা’ শিরোনামে। পাশাপাশি লাল কালিতে ‘স্বাধীনতার সব স্মৃতি ফুটছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে’ লেখাটি নজর কেড়েছে।
আঞ্চলিক সংবাদপত্রে বিশেষ সংখ্যা
বন্দরনগরের আঞ্চলিক পত্রিকাগুলোর প্রথম পৃষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য কোনো বিশেষ প্রতিবেদন না থাকলেও, ছিল নগরের বিশিষ্টজনদের লেখায় সমৃদ্ধ বিশেষ সংখ্যা। এতে বিশেষ নিবন্ধের পাশাপাশি প্রকাশিত হয় দেশের প্রথিতযশা কবিদের স্বাধীনতার কবিতা।
আজাদীর বিশেষ সংখ্যায় শিক্ষাবিদ ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর লেখার শিরোনাম ছিল ‘স্বাধীনতার সুফল, কুফল।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর লেখার বিষয় ছিল ‘বঙ্গবন্ধুর মানস ও অসাম্প্রদায়িক ধর্মচিন্তা।’ এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে শামসুল হক, ফারহানা আনন্দময়ী, আলহাজ্ব মো. গোলাম নবী, মিলন বণিকের লেখার পাশাপাশি একগুচ্ছ কবিতা।
পূর্বকোণের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘তোমার জন্য হে স্বাধীনতা।’ একই পৃষ্ঠায় মুক্তিযোদ্ধা মীর্জা মনসুরের একটি বিশেষ সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি মোহিত উল আলম, প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীসহ স্বনামধন্য লেখকদের লেখা নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যাও প্রকাশ করে।
পূর্বদেশের বিশেষ সংখ্যায় আলী প্রয়াস, খোরশেদ মুকুল, ফাউজুল কবির, আব্দুস সালাম, ওয়াসীম আহমেদ, ডা. বরুন কুমার আচার্য বলাই ও মোহাম্মদ অংকন লিখেছেন স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে।