বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি ছাপিয়ে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের এক তরুণী।
শৌচাগার না থাকার কারণে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার ঘটনার কথা অনেকেই জানেন। ভারতের কিছু কিছু রাজ্যে বাড়িতে শৌচাগার তৈরি ও ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, নানা ব্যক্তি উদ্যোগের কথাও শোনা গেছে। এমনি এক উদ্যোগ নিয়ে মুর্শিদাবাদের তরুণী সামসাল বেগম নিজের বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি ছাপিয়ে জন সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করলেন।
আগামী ৩০ আগস্ট তার বিয়ে। ছাপানো হবে বিয়ের কার্ড। ঠিক সেই সময় বড়ঞার একঘড়িয়া গ্রামের পাত্রী সামসাল বেগম আবদার করে বসেন, ‘বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি থাকতে হবে।’
বাড়ির লোকজনের আপত্তির মুখেও সামসাল তার সিদ্ধান্তে অনড়। তিনি সবাইকে বোঝান, শৌচাগার না থাকাটা মেয়েদের কাছে চরম অসম্মানের ব্যাপার। এই কার্ডটা যাদের বাড়ি যাবে, তারাও এ ব্যাপারে সচেতন হবে।
পাঁচথুপি ত্রৈলোক্যনাথ হাইস্কুল থেকে ২০১৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে পাস করেন সামসাল। অভাবের সংসারে সামসালের আর কলেজ যাওয়া হয়নি। দেখা হয়নি ‘টয়লেট, এক প্রেমকথা’। তবে সেই সিনেমার গল্প শুনেছেন। শৌচাগার নেই বলে বিয়ে ভাঙার কথাও তিনি পড়েছেন খবরের কাগজে।
বড়ঞা ব্লককে নির্মল করতে এক চা বিক্রেতা ও সেলুনের মালিক দোকানের সামনে ব্যানার টাঙিয়ে ঘোষণা করেছেন- বাড়িতে শৌচাগার না থাকলে কিংবা থাকলেও তা ব্যবহার না করলে চা মিলবে না। হবে না চুল-দাড়ি কাটা। সামসালের এটাও অজানা নয়।
তিনি বলেন, আর সেই কারণেই আমি সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেললাম। বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবির উপরে আমি ‘ইজ্জত ঘর’ কথাটা লিখতে বলেছি। যাতে বোঝা যায়, শৌচাগার না থাকাটা কতটা অসম্মানের।
পাশের গ্রাম পাঠানপাড়ার পাত্র তাউসেফ রেজা আহমেদ হবু স্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আগামী ৩০ আগস্ট তাদের বিয়ে। মুচকি হেসে তিনি বলেন, ‘ভাগ্যিস, আমার বাড়িতে শৌচাগার আছে!’
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, ওই তরুণী দীর্ঘদিন থেকেই এলাকার লোকজনকে শৌচালয়ের বিষয়ে সচেতন করছেন। তবে নিজের বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রে শৌচাগারের ছবি ছাপানো, এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
জয়নিউজ/আরসি