‘আগামী সাতদিনের মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্ণফুলী তীরের ২ হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা না হলে কর্ণফুলীর সব ঘাট অচল করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতে অবমাননার অভিযোগও আনা হবে।’
কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে ১০টি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও সাম্পান মাঝিদের বৈঠা বর্জন সমাবেশে বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) কর্ণফুলী তীরের সদরঘাটে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঘাটে নিজেদের সাম্পান রেখে শত শত মাঝি মানববন্ধন ও বৈঠা বর্জন সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, দেশের ৯২ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি যে নদী দিয়ে হয় সেই নদী রক্ষায় এতো নাটকীয়তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ৬ দিন উচ্ছেদ অভিযান শেষে কী কারণে জেলা প্রশাসন নীরব হয়ে গেল তা প্রশাসন জানতে চায়। জনগণকে অন্ধকারে রেখে অতীতে কোন ষড়যন্ত্র সফল হয়নি, এখনো তা হতে দেওয়া যাবে না।
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও বৈঠা বর্জন সমাবেশে বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন, ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতি, সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতি, চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যাণ সমিতি, ইছানগর বড় সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতি, কর্ণফুলী নদী ফিশিং জাহাজ যাত্রী পারাপার কল্যাণ সমিতি, সদরঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ও সদরঘাট লেবার কল্যাণ সমিতির নেতারা অংশ নেন।
মানববন্ধন পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল, কর্ণফুলী গবেষক ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইদ্রিচ আলী, চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা জিন্নাত আলী লেদু, আবুল কালাম, সহসভাপতি জাগির আহম্মদ, সহসম্পাদক আবদুল মালেক ও অর্থ সম্পাদক ফরিদ আহম্মদ, চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাফর আহমেদ, ইছানগর বড় সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতি সভাপতি সাইফুর রহমান, কর্ণফুলী নদী ফিশিং জাহাজ যাত্রী পারাপার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আলী নূর, সদরঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জুয়েল, সদরঘাট লেবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবদুল জব্বার প্রমুখ।
সিইউজে সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল বলেন, উচ্ছেদ অভিযান সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কর্ণফুলী রক্ষার এই আন্দোলন থামবে না। কর্ণফুলী রক্ষায় চট্টগ্রামের সব মানুষ আজ এক হয়েছে। আমরা আদালতের নির্দেশনার বাস্তবায়ন চাই।
অধ্যাপক ইদ্রিচ আলী বলেন, আদালতের নির্দেশনা নিয়ে লুকোচুরি চলবে না। আমরা প্রশাসনকে সতর্ক করছি আগামীতে আপনাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আদালত এবং জনগণের কাঠগড়ায় দোষি হওয়ার আগে উচ্ছেদ অভিযান সম্পন্ন করুন।
আলীউর রহমান বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন কর্ণফুলী তীরের জমি ইজারা ও ব্যবহার করে অর্থ উর্পাজন করে। কিন্তু কর্ণফুলী রক্ষার ক্ষেত্রে বিমাতাসুলভ আচরণ করবে তা মেনে নেওয়া যায় না। কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা আগামী ৭ দিনের মধ্যে শুরু না হলে আমরা রাস্তায় নামবো, উচ্চ আদালতে যাব।