জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আদলে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে প্রাকৃতিক পক্ষীশালা (ন্যাচারাল এভিয়ারি)। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির ৬ ভাগের ১ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যেই প্রকল্পটির কাজ শেষ এবং আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে এ প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, চলতি বছরের মার্চ থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চিড়িয়াখানার নিচের অংশে এ প্রাকৃতিক পক্ষীশালা হচ্ছে। এছাড়া এ পক্ষীশালা নির্মাণের জন্য পুরো পাহাড়ের পাদদেশে সীমানা দেয়াল তৈরি করছে কর্তৃপক্ষ। এতে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা আরো জোরদার হবে। চলতি বছরের জুনের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে পারে।
সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিড়িয়াখানার নিচের অংশে সিঁড়ির পাশে পাহাড়ের পাদদেশে সীমানা দেয়ালের কাজ চলছে। কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করছেন।
কর্মরত এক শ্রমিক জয়নিউজকে জানান, মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে তারা এখানে কাজ করছেন। বেশ দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। দুই মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক পক্ষীশালাটি অনেকটা জাবির পাখির অভয়ারণ্যের মতো হবে। জাবির মতো এখানে কৃত্রিম লেক তৈরি করা হবে। দেশীয় বিভিন্ন পাখিসহ শীত মৌসুমে নানা অতিথি পাখিও এখানে ভিড় করবে। এখানে পাখির জন্য কোনো খাঁচা থাকবে না। পাখিরা আপন মনে পুরো পক্ষীশালা চষে বেড়াবে। দর্শনার্থীরা নিচ থেকে পাখিদের কিচির মিচির শুনবে এবং সৌন্দর্য্য উপভোগ করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. সাহাদাৎ হোসেন শুভ জয়নিউজকে বলেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পে প্রাকৃতিক পক্ষীশালার পাশাপাশি পুরো পাহাড়ের পাদদেশে সীমানা দেয়াল দেওয়া হবে। সীমানা দেয়ালটি মোট ৬৭০ ফুট দীর্ঘ হবে। ইতোমধ্যে ১০০ ফুটের কাজ শেষ হয়েছে। এতে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা আরো জোরদার হবে।
তিনি বলেন, জাবিতে যেমন পাখির প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য আছে, ঠিক সেরকমই একটি অভয়ারণ্য করতে চাইছি আমরা। এতে করে শীতকালে এখানে বিভিন্ন বিদেশি পাখির দেখা পাওয়া যাবে। জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও আগামী বছরের জানুয়ারি মাসেই এ প্রকল্পের সুফল পাওয়া শুরু হবে।
বাংলাদেশের আর কোনো চিড়িয়াখানায় এমন প্রাকৃতিক পক্ষীশালা নেই। তাই এ পক্ষীশালা নির্মিত হলে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় একটি আধুনিক পক্ষীশালার উদ্বোধন করা হয়। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থের এই পক্ষীশালায় আবাস মিলেছে ছয় প্রজাতির ৩৪২টি পাখির। যার সবগুলোই বিদেশি। এর মধ্যে আছে লাভ বার্ড, লাফিং ডাভ, ফিজেন্ট, রিং নেড পেরোট, কোকাটেইল এবং ম্যাকাও।
১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম নগরের ফয়েসলেক এলাকায় ছয় একর জায়গা নিয়ে নির্মিত হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ চিড়িয়াখানায় বর্তমানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বাঘ, সিংহ, হরিণ, কুমির, অজগর, ভাল্লুকসহ প্রায় ৪৭ প্রজাতির প্রাণী।