প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারো সঙ্গে যুদ্ধ করবো না, যুদ্ধ করতে চাই না। আমরা সবার সঙ্গে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।
তিনি বলেন, জাতির পিতা যে নীতিমালাটা দিয়ে গিয়েছিলেন সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরীতা নয়। আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি। সেই নীতিমালা মেনেই কিন্তু আমরা চলছি।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারো সঙ্গে কোনো সমস্যা থাকলে সেটাও সমাধান করছি আলোচনার মাধ্যমে। আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের আক্রমণ করে তাহলে তার যেন যথাযথ জবাব আমরা দিতে পারি, আর আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব যেন রক্ষা করতে পারি সেই প্রস্তুতিটা সব সময় আমাদের থাকতে হবে। যুদ্ধের জন্য নয় শান্তির জন্য আমাদের প্রস্তুতি দরকার।
এসময় তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা এবং ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমা সমস্যা সমাধানের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করেছি, চুক্তি সম্পাদন করেছি। তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এদেরকে (রোহিঙ্গা) নিজ দেশে ফরত পাঠানোটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এখনো কাজ করে যাচ্ছি। মিয়ানমারের সাথে আমরা ঝগড়া বাঁধাতে যাইনি।
এর আগে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ্যতা অর্জনের পর চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের অংশ হিসেবে এদিন প্রথম বারের মতো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’, এই নীতিতেই সরকার বিশ্বাসী এবং সেই নীতিতেই সরকার পরিচালিত হচ্ছে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটাই বলব, মিয়ানমার যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী, আমরা কখনও তাদের সঙ্গে সংঘাতে যাব না। বরং তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের নাগরিকদের তারা যেন ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই প্রচেষ্টাই আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। সে বিষয়ে সবাই যেন সেভাবেই দায়িত্ব পালন করেন, সেজন্যও আমি অনুরোধ করব।
প্রাকৃতিক বা মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ যাই হোক না কেন তা মোকাবিলা করার ক্ষমতা বাংলাদেশ রাখে, এ দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়াটাও আজকে বিশ্বের অনেকের কাছেই বিস্ময়।
কেবল মানবিক কারণেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানবিক কারণেই এটা করেছি। নিজেদেরও বলতে গেলে রিফিউজি হিসেবে ’৭৫ এর পরে ৬ বছর বিদেশে অবস্থান করতে হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, নিজের নামটাও আমরা ব্যবহার করতে পারিনি। এরকম দিনও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শরণার্থীরা ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নিজেদেরই অভিজ্ঞতা রয়েছে যে, ১৯৭১ সালে আমাদের ১ কোটি মানুষ শরণার্থী হিসেবে ছিল। তাদেরকে নিয়ে এসে পুনর্বাসন করতে হয়েছে, সেই অভিজ্ঞটাও রয়েছে।