আজ মিষ্টি সুখের উল্লাসে!

মিষ্টিতে অরুচি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া ভার। ডায়াবেটিসে কাবু, এমন বাবুও মিষ্টির আশায় ফ্রিজের দরজায় হাজিরা দেন চুপিচুপি। বাঙালির উপলক্ষ মানেই মিষ্টির অনিবার্য উপস্থিতি। খুশির খবর বা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান হলে তো কথাই নেই। বাঙালির জিহ্বা মুখিয়ে থাকে মিষ্টির স্বাদ নিতে। উৎসবপ্রিয় বাঙালির ক্যালেন্ডারেও মিষ্টি স্বয়ং হাজির হয়েছে পহেলা বৈশাখে।

- Advertisement -

নববর্ষে একে অপরকে উপহারের তালিকায় বরাবরই উপরের দিকে ঠাঁই পেয়েছে মিষ্টিমুখ। উৎসবের জোয়ারে ভেসে যাওয়ার সেই উপকরণের জোগান দিতে বরাবরই এ সময়টায় সাজ সাজ রব থাকে শহরজুড়ে নানান মিষ্টির দোকানে। এ বছরের নববর্ষটিই বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন?

- Advertisement -google news follower

হাজারী গলির ফতেয়াবাদ গিনি ফ্যাশনের মালিক কৃষ্ণ বণিক জয়নিউজকে বলেন, আমি প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মিষ্টি নিয়ে আসি দোকানে। করণে এই দিন যারা দোকানে আসে সবাইকে মিষ্টিমুখ করাই। টাঙ্গাইলের অমূল্য মিষ্টান্ন ভান্ডার থেকে মিষ্টি কিনি। পাঁচ থেকে ছয় কেজি মিষ্টি নিই। পহেলা বৈশাখ বাংলা সালের প্রথম দিন তাই স্বাভাবিকভাবে অন্যদিনের তুলনায় একটু বিক্রয় হয়। যেহেতু নতুন বছর হালখাতা খুলি তাই সকলকে মিষ্টি মুখ করাই। আত্মীয় স্বজনের বাসাতেও পাঠাই মিষ্টি।

মিষ্টি গোল্ড ফ্যশান  স্বত্বাধিকারী রূপক দত্ত বলেন, বাংলা নতুন বছরে উপলক্ষে অনেকে স্বর্ণালঙ্কার তৈরি করেন। এছাড়া বৈশাখ মাস থেকে বিয়েও নানা সামাজিক অনুষ্ঠান থাকে এই জন্য স্বাভাবিক ভাবে বিক্রয় বেরে যায়। বিশেষ দিনে অনেকে প্রিয় মানুষকে স্বর্ণালঙ্কার উপহার দেয়। বছরের প্রথম দিন ক্রেতাদের মিষ্টি মুখ করানো আমাদের একটি রীতি। দেশের প্রসিদ্ধ দোকানে মিষ্টি দিয়ে আমরা ক্রেতাদের আপ্যায়ন করে থাকি।

- Advertisement -islamibank

হাজার বছরের বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে মিষ্টি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে। যে কোন পালা-পার্বণ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানে মিষ্টিমুখ করানোর চল রয়েছে। তাই বৈশাখ উপলক্ষে ব্যস্ত দিন পার করছে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। নগরের হাইওয়ে, সাধু মিষ্টি ভাণ্ডার, মধুবন, মিষ্টি মেলা, দত্ত সুইটস, বোস ব্রাদার্স, বনফুল, ফুলকলি, সাধ, ওয়েল ফুড, ফ্লেভার, সিজল। তবে অনেকে টাঙ্গালের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসোমালায়, নাটরের কাচাগোল্লা, ফরিদপুরের গুড়ের সন্দেশ, বগুড়ার দই বিশেষ খ্যাতি থাকাতে অনেকের এই সব জায়গা থেকে মিষ্টি আনার যোগ থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো এই সব এলাকার মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করে আনন্দ পান।

টাঙ্গাইলের অমূল্য মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক অমর সাহা জয়নিউজকে বলেন, অমূল্য মিষ্টান্ন ভাণ্ডার আমার দাদুর শুরু করেছিলো। তারপর আমার বাবা বর্তমানে আমি করছি। টাঙ্গাইলের নাগরপুরে আমার দোকান। আমার দোকানের বয়স প্রায় ১০০ বছরের কাছাকাছি। তবে পাঁচ থেকে ছয় বছর যাবত আমি চট্টগ্রামে মিষ্টি নিয়ে যায়। বিশেষ করে রসোগোল্লা, চমচম, রসোগোল্লা বেশি পছন্দ করে। আমি প্রতি বছর চট্টগ্রামে ১০ মণের মতো মিষ্টি নিয়ে আসি। প্রতিবছর এক লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ টাকা বিক্রয় হয়। আমার চট্টগ্রামে কোনো দোকান নেই।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি দোকেনে আমি মিষ্টি বিক্রয় করি। অনেক সময় দোকানদারা নিজেদের বাসার এবং আত্মীদের জন্য নিয়ে যায়। অনেক সময় চট্টগ্রামের অনেক মানুষ বাড়ির অতিথিকে আমার দোকানের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করে।

মিষ্টি বাঙালির বিলাসিতা নয়। শুভ কাজের শুরুতেই হোক বা খাওয়া-দাওয়ার শেষ পাতে, মিষ্টি তার চাই-ই। কী এই ‘মিষ্টি’ রেসিপি? কেন এমন বাহারি নাম? এমন মিষ্টি প্রশ্নে অবশ্য মুখ খুলতে চাননা কোন মিষ্টি কারিগর!

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ