জয়নিউজে কাজ শুরু করেছিলাম গত বছরের জুন থেকে। যদিও সেপ্টেম্বর থেকেই আমাদের আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু। নতুন প্রতিষ্ঠানে নতুন কিছু দেওয়ার তাগাদা থাকাই স্বাভাবিক। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই পাঠকের নানামুখি প্রতিক্রিয়ায় সিক্ত হচ্ছিলাম প্রতিনিয়ত। এরমধ্যেই করিৎকর্মা সম্পাদক অহীদ সিরাজ চৌধুরী একদিন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলেন কাগজ বের করবেন। নির্বাহী সম্পাদক বিপ্লব পার্থ বললেন, ‘দাদা, আপনি হাল ধরেন। হয়ে যাবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় পত্রিকার পৃষ্ঠাসজ্জা পড়ান আমাদের পরামর্শক সম্পাদক রাজীব নন্দী। তিনিও অভয় দিলেন। একটি ভালো কাজের শুরুর জন্য এই-ই যথেষ্ট।
মার্চের মাঝামাঝি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। সামনের মাসে পহেলা বৈশাখ। বৈশাখী সংখ্যা দিয়ে উদ্বোধন হোক তবে আমাদের জয়নিউজের প্রিন্ট সংস্করণ। মেয়র মহোদয়ের হাতে আজ শুভ নববর্ষের দিন যে তাজা পত্রিকাটি তুলে দিলাম, এটাই শুরুর গল্প। এরপর চৈত্রের শেষ ক’টি দিন কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখ ফেরানোর উপায় ছিল না। চারদিনেই সংবাদ ও পৃষ্ঠা সম্পাদনায় ১২ এপ্রিল প্রেসে চলে গেল কাগজ। ১৩ এপ্রিল রাতে তাজা পত্রিকা চলে এল অফিসে। নববর্ষের আগের রাতে সাদা অফসেট কাগজের ট্যাবলয়েড এই পত্রিকাটির প্রথম কপিটি তুলে দিলাম সম্পাদকের হাতে। সম্পাদক তখন আপন মনে পরদিনের অনুষ্ঠানের জন্য নিজ হাতে নকশা আঁকছেন অফিসে বসে।
উদ্বোধনী সংখ্যা- সব রিপোর্টারের প্রত্যাশা ছিল তাদের নিউজ যাতে বিশেষভাবে প্রকাশ হয়। আমিও চাইছিলাম প্রথম সংখ্যাটাই যাতে সবাই খুশি হয়। তাই গতানুগতিক ধারায় না করে একটা টেকনিক্যাল লিড করলাম। যার উপরে ছিল একটি বক্স আইটেম।
অনেকদিন পর পত্রিকার মেকআপ করতে বসলাম। সকাল থেকে মাঝরাত, কম্পিউটারের মনিটরে টানা কাজ। নানান সংবাদকে নানান বিন্যাসে আট পৃষ্ঠায় সাজানোর চেষ্টা। এর মাঝে সম্পাদকের নিয়মিত মনিটরিং চলছে। পরামর্শক সম্পাদক অভিনব সব আইডিয়ার শিরোনাম দিয়ে সহযোগিতা করছে। বার্তা ও সম্পাদনা বিভাগের সকল কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমে ধীরে ধীরে আটপাতা ভরে উঠল জয়নিউজের কাগুজে সংস্করণ।
প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠাজুড়ে ছিল বৈশাখের বিশেষ প্রতিবেদন। নতুন বছর কেমন যাবে, জ্যোতিষী অভয়মিত্র’র অভয়বাণী দিয়ে সাজলো পুরো রঙিন একটি পাতা। আরেক রঙিন পাতাজুড়ে ছিল ২১ বিশিষ্টজনের ভাবনা। ভেতরে সাদাকালোর দুটি পাতা ছিল সাম্প্রতিক সময়ে জয়নিউজের এক্সক্লুসিভ সব রিপোর্টে।
পত্রিকা প্রকাশ হল। এবার প্রতীক্ষা মূল্যায়নের। এ লেখা যখন লিখছি তখন সাধারণ পাঠকের প্রতিক্রিয়া পাওয়ার উপায় ছিল না। তবে একজনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল। শুধু একজন বললে ভুল হবে, বিশেষ একজনের। তিনি জয়নিউজ চেয়ারম্যান। এর চেয়েও বড় পরিচয় তিনি নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দীন। সম্পাদকের হাত থেকে জয়নিউজ পত্রিকা পাওয়ার পর নগরপিতা বলেন- পত্রিকার শিরোনাম ভালো হয়েছে। গেটআপ খুব ভালো হয়েছে।
সবমিলিয়ে ৮ পৃষ্ঠার ৫ টাকা দামের পত্রিকাটি আর থাকল না ৫ টাকায়। জয়নিউজের প্রথম সংখ্যাটি হয়ে রইল অমূল্য সম্পদ!
লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, জয়নিউজ।