পূর্বপরিচিত ইকবালের সঙ্গে ভাটিয়ারিতে স্ক্র্যাপ লোহা দেখতে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী সোহেল। সেখান থেকে ইকবাল তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন কয়েকজন নারী। অস্ত্রের মুখে সোহেলকে বিবস্ত্র করে ওই নারীদের সঙ্গে তোলা হয় আপত্তিকর ছবি। তারপর সোহেলকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে দাবি করা হয় ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। তবে এত করেও পার পায়নি অপরাধীরা। বিস্তারিত পড়ুন আমাদের সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি এম সেকান্দর হোসাইনের প্রতিবেদনে।
ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অশ্লীল ছবি তুলে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে ইকবাল হোসেন নামে এক যুবককে আটক করেছে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকেও।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি তেলিপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ীর নাম মোহাম্মদ সোহেল রানা (৩২)। তিনি বি-বাড়িয়া জেলার কসবা থানার মাস্টার বাড়ি শ্যামপুর গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে। ব্যবসায়িক কারণে তিনি বর্তমানে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারির মাদামবিবিরহাট চেয়ারম্যানঘাটা এলাকায় বাস করেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারিতে স্ক্র্যাপ লোহা দেখতে আসেন ব্যবসায়ী সোহেল। পূর্বপরিচিত হওয়ার সুবাদে ওই এলাকার বাসিন্দা ছবির আহমেদের ছেলে ইকবাল হোসেন তাকে ভাটিয়ারি সাগর উপকূলে অবস্থিত ভাটিয়ারি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ লোহা দেখার জন্য যেতে বলেন। তিনি সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করে ওই ইয়ার্ডে যান। কিন্তু ইয়ার্ড বন্ধ থাকার কারণে ইকবাল তাকে (সোহেল) বাড়িতে যেতে বলেন। ইয়ার্ডের পাশেই ইকবালের বাড়ি। তিনি দুপুর ২টার দিকে ইকবালের বাড়িতে গেলে তাকে ওই বাড়িতে থাকা কয়েকজন নারী জিম্মি করে ফেলে। একপর্যায়ে ইকবাল এসে ওই নারীদের সঙ্গে অস্ত্রের মুখে সোহেলকে বিবস্ত্র করে মোবাইল দিয়ে ছবি তোলেন। বিকেল তিনটার দিকে সোহেলের পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা মুক্তি দাবি করে ওই প্রতারক চক্র।
এসময় সোহেলের ব্যবসায়িক পার্টনার শামীম বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশকে জানান। ওই দিনই মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার কথা বলে কৌশলে ডেকে এনে ইকবাল নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে নিয়ে উদ্ধার করা হয় ওই ব্যবসায়ীকে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এস এম জুলফিকার হোসেন জয়নিউজকে বলেন, আটক ইকবাল কয়েকজন নারী নিয়ে ব্যবসায়ীর উলঙ্গ ছবি তুলে মুক্তিপণ দাবি করছিল। পুলিশ কৌশলে মুক্তিপণ দেওয়ার কথা বলে ইকবালকে আটক করে। পরে ওই ব্যবসায়ীকে ইকবালের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে তার নারী সহযোগীরা পালিয়ে যাওয়ার কারণে তাদের আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভাটিয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করছিল একটি প্রতারক চক্র। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় মঙ্গলবার রাতে ব্যবসায়ী সোহেল রানাকে উদ্ধার করা হয়েছে।