উৎসবের আমেজ, হালদাপাড়ে ডিম সংগ্রহকারীরা

বিশ্বের একমাত্র মিঠাপানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদায় কার্প জাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ) মা-মাছের ডিম ছাড়াকে কেন্দ্র করে নদীর পাড়ে এখন উৎসবের আমেজ। প্রতিবছর এপ্রিল মাসে প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও মেঘের গর্জনে ডিম ছাড়ে মা-মাছ। তবে এপ্রিলের শুরুতে প্রথম জো’তে নদীতে মা-মাছ ডিম ছাড়লেও এবার ছাড়তে দেরি করছে।

- Advertisement -

পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি না হওয়া, পানিপ্রবাহ কমে যাওয়া, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যান্ত্রিক যানের অবাধ চলাচল এবং দখল-দূষণের ফলে মা-মাছের ডিম ছাড়তে দেরি হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। তবে এই ভরা পূর্ণিমার দ্বিতীয় জো’তে মা-মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য জাল, নৌকা, ডিম ধরার মশারি জাল, বালতিসহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে অর্ধ সহস্রাধিক নৌকা নিয়ে হালদাপাড়ে প্রহর গুণছে ডিম সংগ্রহকারীরা।

- Advertisement -google news follower

সরেজমিনে দেখা গেছে, এবার ডিম আহরণকারীদের আগাম প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে নিষিক্ত ডিম সংগ্রহে প্রস্তুতি হিসেবে তারা তৈরি করে রেখেছে রেণু ফোটানোর জন্য দুই পদ্ধতিতে মাটির কুয়া। এগুলো দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫ ফুট ও প্রস্থে ১০ ফুটের মত।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, এবার সরকারিভাবে কংক্রিট দিয়ে কিছু কুয়া তৈরি করে দেওয়া হয়েছে ডিম সংগ্রহকারীদের। হাটহাজারীর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল আলম জানান, রাউজান উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে দেড় শতাধিক মাটির কুয়া প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি ৩টি হ্যাচারিতে ৮৯টির মধ্যে প্রায় ৬০টি কুয়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে হাটহাজারী অংশে ৬০টি মাটির কুয়ার পাশাপাশি ৩টি হ্যাচারিতে ১১৮টি কুয়া ডিম রাখার জন্য প্রস্তুত আছে। সবমিলিয়ে এবার ৪১৭টির মতো কুয়া ডিম রাখার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

- Advertisement -islamibank

এদিকে মা-মাছ সংরক্ষণ, ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়া সংস্কার ও  নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগের কারণে হালদায় ডিম সংগ্রহের পরিমাণ এবার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে, এমনটাই আশা করছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন।

তিনি বলেন, জেলেদের বলেছি, প্রয়োজন হলে আরও কুয়া তৈরি করে দেবে উপজেলা প্রশাসন। হালদায় জেলেদের ডিম সংগ্রহে সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে চাই আমরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া জয়নিউজকে বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এ সপ্তাহেই হালদায় মা মাছের ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা আছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ভরা পূর্ণিমায় ডিম সংগ্রহে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে।

জয়নিউজ/আরসি

 

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM