সেলিমের দোকানে ১৫ স্বাদের চা!

দূর-দূরান্ত থেকে তার দোকানে মানুষ আসেন গরম চায়ে চুমুক দিতে। এক-দুই নয়, ১৫ স্বাদের চা বিক্রি হয় তার দোকানে! ঋতুবদলের সঙ্গে সঙ্গে তার দোকানের চায়ের স্বাদও বদলায়। শুধু ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ? ওষুধি গুণের হারবাল চাও মেলে তার দোকানে।

- Advertisement -

বলছিলাম নগরের উত্তর হালিশহরের বি ব্লকের ইত্যাদি চা ঘরের কথা। শাহজাহান বেকারির মোড়ের ডানে ছোট একটি টিনের ছাউনিযুক্ত দোকান ভাড়া নিয়ে ষোল বছর ধরে ভিন্ন স্বাদের চা বিক্রি করছেন শের আলী ওরফে সেলিম নামের এক চা বিক্রেতা।

- Advertisement -google news follower

ছোট্ট এ চায়ের দোকানের উপার্জনের টাকা দিয়েই চলে সেলিমের সংসার। প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে প্রায় ভোররাত পর্যন্ত চলে ক্রেতার চাহিদা মতো বিভিন্ন মসলা ও ওষুধি উপকরণ দিয়ে তৈরি চা বিক্রি।

সেলিমের দোকানে ১৫ স্বাদের চা!

- Advertisement -islamibank

এই দোকানে রয়েছে ১৫ রকমের চা। বিশেষ দিনগুলোতে থাকে ভিন্নরকম চায়ের আয়োজন। প্রতিদিনের চায়ের আইটেমের মধ্যে রয়েছে হারবাল চা (২০ টাকা), নারকেল চা (২০ টাকা), মাল্টা চা (২০ টাকা), মাসালা চা (২০ টাকা), লেমন চা (১৫ টাকা), লাল চা (১০ টাকা) ও দুধ চা (৮ টাকা)।

ঈদুল ফিতর ও কোরবানের ঈদে থাকে অন্যরকম আয়োজন। এছাড়া মধু মাস হিসেবে পরিচিত জৈষ্ঠ্য মাসে থাকে আম চা, আপেল চা, আনারস চা, মালাই চা, স্টবেরি চা, তেতুঁল চা, আমলকি চা ও জলপাই চা। প্রতি কাপ চায়ের দাম ৩০ টাকা। প্রতিদিন তিনশ-এর বেশি কাপ চা বিক্রি হয়।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট একটি চৌকির উপর বসে চা তৈরি করছেন সেলিম। একের পর এক ক্রেতা ঢুকে চাইছেন চা। কেউ চাইছেন মাসালা চা। আবার কেউ চাইছেন হারবাল চা। অনেকে বলছে, অনেক দূর থেকে এসেছি, লেমন চা টা আগে দেন। এভাবে সবার কাছে যার যার পছন্দ অনুযায়ী তৈরি করে তুলে দিচ্ছেন চা।

কালুরঘাট থেকে চা খেতে আসা মহিউদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, আমি কালুরঘাট এলাকায় কাজ করি। কিন্তু যখন থেকে এ চায়ের দোকানের কথা শুনেছি, প্রতিদিন একবার হলেও এখানে আসি চা খেতে। যত রাতই হোক একবার আসবই এ দোকানে। এ দোকানের চা না খেলে ঘুম আসতে চায় না।

হালিশহর এলাকার আলী হোসেন জয়নিউজকে বলেন, এ দোকানের হারবাল চা না খেলে ভালো লাগে না। তাই প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে এখানে ছুটে আসি। গত চার বছর ধরে নিয়মিত এ দোকানের চা খেয়ে যাচ্ছি। চায়ের মধ্যে ওষুধি গুণ থাকায় শরীরের অনেক সমস্যা ভালো হয়ে যায়।

চা দোকানদার সেলিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার।

এসব চা তৈরি কোথা থেকে শিখেছেন তা জানতে চাইলে তিনি জয়নিউজকে বলেন, এটা কারও কাছে শেখা নয়। নিজের কিছু আইডিয়া এবং ছোটবেলায় দেখতাম আমার বড় মা (দাদার মা) বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ওষুধ তৈরি করত। উপকরণগুলো নগরের আছদগঞ্জ থেকে কিনে আনা হত। মাঝেমধ্যে উপকরণগুলো আনতে আমাকে পাঠাত। তখন থেকে কোন উপকরণ কোন কাজে ব্যবহার হত তা মনে রাখতাম। আমার বড় মা মারা যাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিই কিছু একটা করব। তখন থেকে এই ব্যবসা শুরু করি। ওষুধি উপকরণগুলো চায়ের মধ্যে মিশিয়ে চায়ে ভিন্ন স্বাদ আনার চেষ্টা করি। চায়ের স্বাদ অন্যরকম হওয়াতে ধীরে ধীরে পরিচিতি বাড়ে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাঁকাতে হয়নি। বর্তমানে দোকানের আয় দিয়ে ভালোই চলছে।

জয়নিউজ/রুবেল/জুলফিকার
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM