বিএনপির বার বার রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনে বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দল। ইতোমধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামায়াত ও ২০ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন।
যদিও বিএনপি মহাসচিব জামায়াত ও ২০ দলের নেতাদের ধৈর্য ধরে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে অনুরোধ করেছেন। তবে ২০ দলের অন্যতম প্রধান শক্তি জামায়াত কোনোভাবেই বিএনপির সংসদে যোগ দেওয়ার ঘটনা মেনে নিতে পারছে না। তাদের ধারণা রাজনৈতিক মাঠে বিএনপি আরও একবার ভুল করেছে। আর এবারের মাশুল বিএনপিকে দিতে হবে চড়া মূল্যে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক কেন্দ্রীয় নেতা জয়নিউজকে বলেন, দেখুন- বিএনপির কারণে আমরা রাজনৈতিক মাঠে এখন ফেরারী অবস্থায় আছি। বিএনপিকে ছাড়া আমরা ২০১৪ সালে নানান লোভ আর প্রলোভন থাকার পরও দশম সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। এমনকি বিএনপিকে ছেড়ে আসলে জামায়াতকে মূল্যায়ন করা হবে, বার বার এমন অফার পেয়েও আমরা বিএনপির সঙ্গে আছি বন্ধুর মতো।
তিনি বলেন, কিন্তু বিএনপি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে অনেকটা প্রস্তুতি ছাড়া অংশগ্রহণ করে। সে নির্বাচনের পর কারচুপির প্রতিবাদে বিএনপি ফলাফল বয়কট করে আবার কোনো ধরনের রফা দফা ছাড়া সংসদে যোগ দিয়েছে। এর ফলে খালেদা জিয়ার মুক্তির ইস্যুটি আটকে গেল। সরকার বৈধতা পেয়ে গেল। যার ফলে ২০ দলীয় জোটকে সরকার রাজনৈতিক মাঠে আরও চাপে রাখবে। দমন নির্যাতন আরও বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, আমরা চেয়েছিলাম বিএনপি যদি সংসদে যোগ দেয় তবে তা হতে হবে রফা-দফা করে। এক ধরনের সমঝোতা করে। কিন্তু দেখেন, বিএনপি সংসদে যোগ দিয়েছে, অথচ দলের মহাসচিব নির্বাচিত হয়েও শপথ নেননি। এর ফলে কী বার্তা পৌছাবে কর্মীদের কাছে? জামায়াতের মতো ২০ দলের প্রতিটি কর্মী বিএনপির দ্বৈত নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে বিএনপির শপথ ও কর্মীদের হতাশা নিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জয়নিউজকে বলেন, কর্মীরা হতাশ হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে শপথ নিয়ে আমাকে কোন প্রশ্ন করবেন না। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। যিনি শপথ নিতে অনুমতি দিয়েছেন তাকে প্রশ্ন করুন । আমি একজন কর্মী মাত্র। আমার এতসব জানতে নেই।
এদিকে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরাও চেয়েছি বিএনপি সংসদে যাক। কিন্তু বিএনপি ভুল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংসদে যোগ দিয়েছে। এর ফলে বিএনপি সরকার থেকে কোন সুবিধাই পাবে না। বরং এখন নানান কটু কথা শুনবে।
তিনি বলেন, আমি শুনেছি তারেক রহমান অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু আমার ধারণা, এই তথ্য ভুলও হতে পারে। কারণ বিএনপির সংসদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত তারেক রহমান নিতে পারেন, শুনেই অবাক লাগছে। তারেক রহমানের এত বুদ্ধি হলো কী করে!