চাকু আর খেলনা পিস্তল দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া ছিল মো. সোহেলের উদ্দেশ্য। কিন্তু খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আবুল কাশেমের স্ত্রী রোকসানা আক্তার মনি তা কোনোভাবেই হতে দিতে রাজি ছিলেন না। তার কথা ছিল, তিনি মরে গেলেও টাকা দেবেন না। একথা শোনার পর ব্যাগে থাকা চাকু বের ছুরিকাঘাতে রোকসানাকে খুন করে সোহেল।
প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে পুলিশের কাছে এসব তথ্য জানিয়েছে গ্রেপ্তারকৃত মো. সোহেল।
বুধবার (১ মে) দুপুরে কোতোয়ালি থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।
আমেনা বেগম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সোহেল নিহত রোকসানা ও তার স্বামী আবুল কাশেমের পূর্বপরিচিত এবং তাদের মামা-মামী ডাকতেন। সোহেল ৩০ হাজার টাকা চেয়েছিল। চাকু ও পিস্তল বের করে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করবে এমন পরিকল্পনা ছিল তার। পরে রোকসানা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ছুরিকাঘাত করে সোহেল। চলে যাওয়ার সময় সে বাসায় থাকা ল্যাপটপ, মোবাইলসহ স্বর্ণালংকার ব্যাগে ভরে নিয়ে যায়।
পুলিশ আরো জানায়, রোকসানাকে হত্যার পর তার ছেলে আবদুল আজিজকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে সোহেল।
কোতোয়ালি জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা, কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম সোহেলকে ধরতে বিশেষ অভিযানে যায়। বুধবার (১ মে) ভোররাতে কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয় সোহেল।
সোহেল চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী ঈদ পুকুরিয়া এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান জানান, রোকসানাকে হত্যা করে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আবদুস সোবহান নামে এক পথচারী সোহেলকে বাঁধা দেয়। এ সময় সে তাকেও ছুরিকাঘাত করে। পরে পালিয়ে গিয়ে খাতুনগঞ্জের আমির মার্কেট এলাকার নিউ পাক বিল্ডিংয়ে লুকোয় সোহেল।
সন্ধ্যায় সে মইজ্জারটেক এলাকায় ১৮০০ টাকায় নতুন বাসা ভাড়া নেয়। নতুন বাসায় ফোন করে স্ত্রীকেও আসতে বলে। পরে ভোররাতে সেখান থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সোহেল।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদি হাসান, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।