নগরবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হলো। নগরপিতা ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের হাত ধরে যাত্র শুরু করল সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ের স্বপ্নের সুইমিংপুল। এরফলে চট্টগ্রাম থেকে বের হয়ে আসবে আন্তর্জাতিকমানের সাতারু, উদ্বোধনকালে এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মেয়র নাছির।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন সুইমিংপুলে সিজেকেএস সাঁতার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিকমানের সুইমিংপুলের উদ্বোধন করেন নগরপিতা। প্রতিযোগিতায় ২৪টি সাঁতার টিম অংশগ্রহণ করে।
উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে ও একনেকের সহযোগিতায় নগরবাসী পেল স্বপ্নের সুইমিংপুল। এ জন্য চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি আরো বলেন, সুইমিংপুলকে ঢেলে সাজাতে আরো বেশি জনবল এবং ট্রেইনার নিয়োগ করা হবে। নীতিমালার মধ্যদিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন এখানে সাঁতার প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: দর্শনীয় সাজে আউটার স্টেডিয়াম, সুইমিংপুলের উদ্বোধন এপ্রিলে
এসময় মেয়র নাছির আশাবদ ব্যক্ত করে বলেন, এখানে প্রশিক্ষণ নেওয়ার মধ্যেদিয়ে বাংলাদেশ পাবে আন্তর্জাতিকমানের সাঁতারু।
মেয়র বলেন, বছর দেড়েক আগেও নগরের আউটার স্টেডিয়ামের পাশের এই এলাকাটি জঞ্জালে ভরা ছিল। মাদকাসক্ত, ভবঘুরে আর ভাসমানদের দখলে থাকা আউটার স্টেডিয়ামের দক্ষিণাংশ ছিল অপরাধের আঁখড়া। রাত হলেই এলাকা দিয়ে হেঁটে যেতে ভয় পেত মানুষ। আর এখন সে এলাকাটি আলো ঝলমলে এক দর্শনীয় স্থান।
সাঁতার কমিটির চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চেীধুরী বাবুলের সভাপতিত্বে ও সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য আসলাম মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জিপিএইচ গ্রুপের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলমাস শিমুল। এতে বক্তব্য রাখেন সাঁতার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মাহবুব।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি আলী আব্বাস, সিজেকেএসের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য ও জয়নিউজ সম্পাদক অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল ও মো. ইউসুফ।
উল্লেখ, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে ১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সুইমিংপুলটি। নগরের আউটার স্টেডিয়ামের পাশে নির্মিত এই সুইমিং কমপ্লেক্সে পুলের আয়তন১১০০ বর্গ মিটার। যার দৈর্ঘ্য ৫০ মিটার ও প্রস্থ ২২ মিটার, রয়েছে ৮টি লেন। প্রায় ২০ লাখ লিটার পানি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পুলের গড় গভীরতা ২ মিটার। আন্তর্জাতিকমানের পুলটির মূল প্রবেশ পথ পূর্ব দিকে। যার পূর্ব ও পশ্চিম দুই পাশে রয়েছে গ্যালারি। যেখানে বসতে পারবে দেড় হাজার দর্শক। নিচে রয়েছে ডিপ টিউবওয়েল, ফিল্টেশন প্ল্যান্ট এবং ২৫০ কেভি সাবস্টেশন। এছাড়া পশ্চিম পাশে রয়েছে ওয়াটার রিজার্ভার। সুইমিংপুলের পানি প্রসেসিং সিস্টেমে রয়েছে- ডিপ টিউবওয়েল থেকে প্রথমে পানি যাবে রিজার্ভারে। তারপর ফিল্টেশন প্ল্যান্ট হয়ে বিশুদ্ধ পানি যাবে সুইমিংপুলে।
পুল থেকে আবার ওভারফ্লো হয়ে ড্রেনের মাধ্যমে সে পানি যাবে বেনচিং ট্যাংকে। পরে সে পানি আবার রিসাইক্লিং হয়ে যাবে পুলে। পুলের পশ্চিম পাশে রয়েছে ড্রেসিং রুম, অফিস কক্ষ এবং টয়লেট ব্লুক। সবমিলিয়ে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এই সুইমিংপুল।