হালদা নদীর বিভিন্ন স্পটে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা-মাছ। ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন, নমুনার পরিমাণ বেশি নয় তবে ডিম ছাড়ার জন্য এটি মা-মাছের পূর্ব প্রস্তুতি।
রোববার (৫ মে) হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা সংলগ্ন বিভিন্ন অংশে মা মাছ ডিম ছাড়ে।
প্রতিবারের মতো অমাবশ্যায় প্রকৃতির স্বাভাবিক অবস্থায় ডিম ছাড়লেও ডিমের আশায় দীর্ঘদিন ধরে ডিম সংগ্রহকারীরা অপেক্ষামান বলে জানান।
তারা আরও জানান, আজ-কালের মধ্যে মা-মাছ পুরোপুরি ডিম দেবে বলে আশা করছি। তবে সাধারণত চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় মেঘের গর্জন ও প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে নদীতে ডিম ছাড়ে মা-মাছ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই উপজেলা হাটহাজারী ও রাউজানের অংশের হালদা নদীর আজিমের ঘাট, অঙ্কুরী ঘোনা, মদুনাঘাট, বাড়িয়াঘোনা, মাছুয়াঘোনা হাট, সিপাহীর ঘাট, গড়দুয়ারা এলাকার ডিমসংগ্রহকারী ও মৎস্যজীবীরা মা-মাছের নমুনা ডিম সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। এসময় কেউ কেউ ১৫-২০টি করে কিংবা ৪-৫টা পর্যন্ত মা-মাছের নমুনা ডিম সংগ্রহ করেছেন।
উত্তর মাদার্শার ডিমসংগ্রহকারী মো. জামশেদ জানান, রোববার সকালের দিকে কয়েকটি করে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। হালদায় এখন জোয়ার। জোয়ারের পানি বেশি হলে মা-মাছ ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা হালদা নদীতে জাল পেতে বসে আছি।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন জয়নিউজকে বলেন, ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন, তারা মা-মাছের আনাগোনা দেখছেন এবং অল্প নমুনা ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন। যেহেতু নমুনা ডিম ছেড়েছে মা-মাছ, সেহেতু এসব মাছের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে মা-মাছ শিকার করতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। ডিম থেকে রেণু ও পোনা তৈরির জন্য হ্যাচারিগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালযয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক হালদা গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া জয়নিউজকে বলেন, শনিবার রাতে নমুনা ডিম ছাড়ার খবর পেয়েছি। নমুনা ডিম ছাড়ার অর্থ হচ্ছে রুই জাতীয় মা-মাছ প্রস্তুত। মাছগুলো পরীক্ষা করে দেখছে ডিম ছাড়ার পরিবেশ, প্যারামিটারগুলো ঠিক আছে কিনা। যদি সব অনুকূলে থাকে তবে ডিম ছাড়বে মা-মাছ।
কবে নাগাদ মা-মাছ ডিম ছাড়তে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, প্রকৃতিতে কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। এমনও হতে পারে জোয়ারের সময় ডিম ছেড়ে দেবে। সবকিছু নির্ভর করছে সময় ও পরিবেশেরে উপর। তবে ডিম সংগ্রহকারীরা জাল, বালতি ও নৌকা নিয়ে মা-মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
জয়নিউজ/তালেব/বিশু
