দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে বলে দাবি করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তাদের অভিযোগ, দেশের সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত তিনটি খাত হচ্ছে- আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (৭২.৫ শতাংশ), পাসপোর্ট সেবা (৬৭.৩ শতাংশ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ- বিআরটিএ (৬৫.৪ শতাংশ)।
বিগত ২০১৭ সালে সার্বিকভাবে দেশের ৬৫.৫ শতাংশ খানা (পরিবার বা ছোট গোষ্ঠী বিশেষ) দুর্নীতির শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একটি জরিপ শেষে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি, জাতীয় খানা রিপোর্ট-২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে টিআইবি। বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিষদের উপদেষ্টা ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি’র পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। এছাড়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা ও পলিসির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. ওয়াহিদ আলম, একই বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা রহমান ও ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ নূরে আলম।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছর সার্বিকভাবে ঘুষের শিকার (ঘুষ দিতে বাধ্য) হওয়া খানার হার ৪৯.৮ শতাংশ। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ঘুষগ্রহণকারী তিনটি খাত হচ্ছে- বিআরটিএ (৬৩.১ শতাংশ), আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (৬০.৭ শতাংশ) ও পাসপোর্ট সেবা (৫৯.৩ শতাংশ)।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৭ সালে খানাপ্রতি গড়ে ৫ হাজার ৯৩০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে এবং সর্বোচ্চ ঘুষ আদায়কারী খাত হলো- গ্যাস (৩৩ হাজার ৮০৫ টাকা), বিচারিক সেবা (১৬ হাজার ৩১৪ টাকা) ও বিমা খাত (১৪ হাজার ৮৬৫ টাকা)। সেবার মোট ঘুষের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৬৮৮.৯ কোটি টাকা। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ৩.৪ শতাংশ ও দেশের জিডিপি’র ০.৫ ভাগ। ২০১৫ সালের তুলনায় এই ঘুষের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে গ্যাস, কৃষি ও বিচারিক খাতে। আর কমেছে শিক্ষা, পাসপোর্ট ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান খাতে। এছাড়া ২০১৫ সালের তুলনায় সেবা খাতে ঘুষের শিকার খানার হার কমলেও ঘুষ আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে।