বোয়ালখালী থেকে নিজের বাবাকে নিয়ে বুধবার (৮ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আসেন জালাল মোস্তফা। উদ্দেশ্য বাবাকে হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি করানো। আত্মীয়ের কাছে শুনেছিলেন এ বিভাগের সামনে চালু হয়েছে রোগী কল্যাণ সমিতির হেল্প ডেস্ক। তবে হেল্প ডেস্কের সামনে গিয়েই তার চোখ ছানাবড়া। কারণ ডেস্ক খালি। কোনো লোক নেই। ফলে কোনো সাহায্যও পাওয়া হল না তার।
শুধু মোস্তফা নন, বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ২০-২২ জন রোগী এভাবেই ফিরে গেছেন হেল্প ডেস্কের সামনে এসে। কী কারণে হেল্প ডেস্ক খালি ছিল সেটি জানেন না খোদ রোগী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
সরেজমিনে দেখা যায়, হেল্প ডেস্কের সামনের চেয়ারে সেবা প্রত্যাশীরা বসে থাকলেও রোগী কল্যাণ সমিতির কারো দেখা পাওয়া যায়নি । রোজা রেখে কষ্ট করে অনেকেই বসেছিলেন দুপুর ৩টা পর্যন্ত। তবুও কারো দেখা মেলেনি।
সেবা নিতে আসা জালাল মোস্তফা জয়নিউজকে বলেন, বোয়ালখালী থেকে বাবাকে নিয়ে এসেছি হৃদরোগ বিভাগে। শুনেছিলাম এখানে একটি হেল্প ডেস্ক করা হয়েছে। কিন্তু দুই ঘণ্টা বসেও কারো দেখা পেলাম না। সেবা দিতে না পারলে এসব খোলার দরকার কি?
এদিকে, রোগী কল্যাণ সমিতির এ ডেস্কটির কারণে হৃদরোগ বিভাগের সামনের বারান্দায় বসানো হয়েছে ৬ সারি চেয়ার। হৃদরোগ বিভাগে রোগীর চাপ বেশি থাকলে আগে এ জায়গায় রোগীদের সেবা দেওয়া হয়। চেয়ারগুলোর কারণে এখন রোগীদের সেবা দিতে হয় বিভাগের ভেতরের বারান্দায় কিংবা মূল ওয়ার্ডের মেঝেতে। এতে যাতায়াতের সমস্যা হয়।
হৃদরোগ বিভাগের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জয়নিউজকে বলেন, হেল্প ডেস্কে বেশিরভাগ সময়েই কেউ থাকে না। অযথাই এখানে এটি খুলে রেখেছে তারা। উল্টো আগে এ জায়গায় আমরা রোগী রাখতে পারতাম। এখন সেটিও পারছি না। এ ডেস্ক থেকে কেউ কোনো সেবা পাচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। সরাসরি বিভাগে আসলেই আমরা সাহায্য করতে পারি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোগী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সাহা জয়নিউজকে বলেন, হেল্প ডেস্কে সার্বক্ষণিক দুইজন মানুষ থাকে। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা অবশ্যই থাকবে। বুধবার কেন ছিল না সেটা ঠিক জানি না। যাচাই করে দেখতে হবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আগত রোগীদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগ বিভাগে হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়। রোটারী ক্লাব অব চিটাগাং মেরিন সিটির সহায়তায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে স্থাপিত হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।