এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঈদযাত্রা শুরুর পর থেকে ঈদ শেষে ঢাকা ফেরার পথে মোট ২৩৭টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২৫৯ জন, আহত ৯৬০। গত ঈদুল আজহার তুলনায় এবার সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা ১৩.৫০ শতাংশ বেড়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ২০১৮ প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, গত ১৬ আগস্ট ১৩ দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জন, আহত ৪৬, ১৭ আগস্ট ২১ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ১৫ জন, আহত হয় ৮৫ জন। দুর্ঘটনার ১৩ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে ২০ আগস্ট। ওইদিন ৩০টি দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৪৫ জনের আর আহত হন এক শ’ জন। পরপর আরও দুইদিনে ২৩ ও ২৪ জন মারা যায়। গত ২০১৬ সালের ঈদুল আজহায় ১৯৩ দুর্ঘটনায় ২৪৮ জন মারা যায়, আহত হয় ১০৫৫ জন, ২০১৭ সালে ২০৫ দুর্ঘটনায় মারা যায় ২৭৪ জন আর আহত হয় ৮৪৮ জন।
দুর্ঘটনায় ১২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ জন, ৪ জন চিকিৎসক, দু’জন প্রকৌশলী, ২ জন সাংবাদিক, দু’জন করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, ৪২ চালক ও হেলপার, ৫৯ জন নারী, ৩৪ শিশু ও ৮ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
সংগঠিত দুর্ঘটনার যানবাহন পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২৯.১৮ শতাংশ বাস, ২৩.৬ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৬.৬ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৫.৯ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ১১.১৫ শতাংশ অটোরিকশা, ৬.৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯.১৬ শতাংশ অন্যান্য যানবাহন দুর্ঘটনায় জড়িত।
দুর্ঘটনার ৩১.৩৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৪.৩৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৭.৫৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১.১০ শতাংশ চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে, ১.২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেচিয়ে ও ৫.০২ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।
একই সময়ে এবার রেলপথে ১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫ জন ও আহত ৭ জন এবং নৌপথে ১৪টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৪ জন আর আহত হয়েছেন ৬৮ জন।
মোজাম্মেল হক বলেন, গত ঈদুল ফিতরে উদ্বেগজনক প্রাণহানিতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক প্রধানমন্ত্রী সড়ক নিরাপত্তায় বেশ কিছু নির্দেশনা দেন। এরপর সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে সড়কের বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শৃঙ্খলা ফেরাতে কয়েক দফা নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার দফতর থেকে যে সকল নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা দ্রত বাস্তবায়ন হলে সড়কে যে মৃত্যুর গণমিছিল চলছে তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সেইফ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট এলায়েন্সের আহ্বায়ক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিআরটিএ এর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান ও এফবিসিআই এর সাবেক পরিচালক আব্দুল হক।