টাকা না দেওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের এক ছাত্রকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছেন রেলওয়ের এক নিরাপত্তাকর্মী।
শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে নগরের বটতলী স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাইয়্যান আলম রসায়ন বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র। আর অভিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মী মশিউর রহমান মুসা রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) একজন সিপাহী। এ ঘটনায় ভেঙে যাওয়া পা জোড়া লাগাতে শনিবার (১৮ মে) রাতে অস্ত্রোপচার চালানো হবে বলে জানিয়েছে রাইয়ান৷
আহত রাইয়ান আলম বলেন, ক্যাম্পাসে যেতে শুক্রবার বিকেলে বটতলী স্টেশনে যাই। গিয়ে দেখি ট্রেন যাচ্ছে না। ট্রেনে যখন ইঞ্জিন লাগানো নেই, আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন ছোট ভাই মিলে ওই ট্রেনের একটি বগিতে গিয়ে বসেছি, যেটাতে ইঞ্জিন লাগানোর কথা। এসময় আরএনবির তিনজন সদস্য আসেন। একজনের নাম মশিউর। তিনি বলে উঠলেন, এই তোরা কারা? তুই করে বলার পর বললাম, আমরা স্টুডেন্ট, ক্যাম্পাসে যাবো। তিনি বলেন, এখানে কেন তোরা? আমি বললাম, আশ্চর্য কথা, আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র, শার্টলে বসতেই পারি। কথা কাটাকাটির মধ্যে তিনি বললেন, তুই টাকা দে। আমি বললাম, আমি ৩ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। আমি ট্রেনের জন্য কাউকে টাকা দেব না। দিলে ক্যাম্পাসকে দেব।
তিনি বলেন, তখন আমি বন্ধুদের মোবাইলে কল দিচ্ছি, যেহেতু সমস্যা করতেছে। আরএনবির ওই সদস্য হঠাৎ করে আমার মোবাইল কেড়ে নিতে চেষ্টা করলেন, তবে আমি দিচ্ছিলাম না। তখন তিনি বললেন, এই কাকে কল দিচ্ছিস দেখি। একপর্যায়ে মোবাইল কেড়ে নিতে না পেরে তিনি দুটি লাঠি দিয়ে আমাকে খুব মেরেছেন। আমার পা ভেঙে গেছে, পরে পাঁচলাইশের পিপলস হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করে দেখলাম। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছোট ভাইও আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছে।
এ ঘটনায় রেলওয়ে নিরাপত্তা ফাঁড়িতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী রাইয়ানের সহপাঠীরা। এদিকে শনিবার দুপুরে বটতলী স্টেশনে একটি মানববন্ধন করেছে ছাত্রলীগ।
যোগাযোগ করা হলে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম স্টেশনের পরিদর্শক আমান উল্লাহ আমান বলেন, শিক্ষার্থীরা যেভাবে চেয়েছে, আমরা ঠিক সেভাবে কাজ করেছি। তাদের দুটি দাবি ছিল, সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণ প্রদান। সবই মেনে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত মশিউর রহমান মূসাকে ক্লোজড করা হয়েছে। সকল কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। রোববার তাকে বরখাস্ত করা হবে।