মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির ওলামা পরিষদের নেতারা বলেছেন, আমরা এতদিন একটি ভুল ও ভ্রান্ত মতবাদের তরিকতের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এজন্য আমরা তওবা করছি। আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
রোববার (২৬ মে) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুনিরীয়ার যুব তবলীগের উগ্র, সন্ত্রাসী, জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদানের জোর দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে মাওলানা আশিকুর রহমান বলেন, তরিকতের আলোকে এ সংগঠনের মাধ্যমে (মুনিরীয়া যুব তবলীগ) সমাজ ও আগামী প্রজন্মকে সত্য ও সুন্দরের পথে পরিচালনার কথা ছিল। কিন্তু সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে ভিন্ন পথে নিজের আখের গোছানোর চেষ্টায় ছিলেন। সে অভিপ্রায়ে তারা স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রতিনিয়ত জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন। যা ওলামা পরিষদসহ রাউজানের শান্তিপ্রিয় আপামর জনসাধারণ সমর্থন করে না।
ইসলাম শান্তির ধর্ম, শান্তির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভই একমাত্র পথ উল্লেখ করে আশিকুর রহমান বলেন, যে তরিকাই হোক না কেন, প্রতিটি তরিকতেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বলা আছে।
তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমরা আগে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির ওলামা পরিষদের বিভিন্ন পদে দায়িত্বশীল ছিলাম। কিন্তু ভণ্ডপীর মুনির উল্লাহর নির্দেশে বিভিন্ন সময় মাহফিলে নির্ধারিত বক্তব্য লিখিত আকারে পাঠিয়ে দেওয়া হত। পরে আমাদের সেটাই পাঠ করতে হত। যা কোরআন, হাদিস তথা ইসলামী শরিয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও উস্কানিমূলক। আমরা লিখিত বক্তব্যের বাইরে কিছু বলতে গেলে মুনির উল্লাহর রোষানলের শিকার হতাম এবং অনেক ওলামা বিভিন্ন সময় নির্যাতিত হয়ে সংগঠন ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ভণ্ডপীর মুনির উল্লাহর লালিত গুণ্ডাবাহিনী তার মতাদর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু বললে তাদের হত্যা, হামলা, মামলাসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং জমি-জমা দখল করত। মাওলানা শফিউল আলম নেজামী, মফজল আহমদ নঈমী, অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দীন বখতেয়ার, মাওলানা মুঈনুদ্দীন রেজভী, মাওলানা নুরুন্নবীসহ অসংখ্য আলেম-ওলামার রগ কাটা, শারীরিক নির্যাতন, লাঞ্ছিত করা ছাড়াও নিরীহ কিশোর নঈমুদ্দীনকে হত্যা করেছে মুনির উল্লাহর অনুসারীরা। সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল আনোয়ার ও আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেলকে হত্যার উদ্দেশে হামলা চালায়।
এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ওলামা পরিষদের মুফতি ইব্রাহিম হানাফী, মাওলানা এমদাদুল হক মুনিরী, সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ রশিদী, মাওলানা মমতাজুল হক নুরী প্রমুখ।