জয়নিউজবিডি ডেস্ক: তিন ম্যাচ সিরিজের অবস্থান এখন এগিয়ে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ২৫ জুলাই গভীর রাতে শুরু। ভেন্যূও সেই একই-গায়ানার প্রভিন্স স্টেডিয়াম। সেখানেই সিরিজ জয়ের লক্ষ্য স্থির করেছে বাংলাদেশ। সেই পরিকল্পনার কথা জানার আগে চলুন শুনে আসি প্রথম ম্যাচ জয়ের পর কি বলছেন আমাদের গেম চেঞ্জাররা।
অন্যদিকে অভিজ্ঞ মুশফিক বলছেন,‘যেভাবে প্রথম ম্যাচ খেলেছি, আশা করছি সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবো। পরের ম্যাচটা এখানে জিততে চাই সঙ্গে সিরিজও’।
গায়ানায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে যার ঝড়ো পারফরমেন্স ১১ বলে ৩০ রান। দুই ছক্কা, তিন বাউন্ডারি। ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ২৭২.৭২!
প্রথম ওয়ানডেতে যে ক্রিকেট হয়েছে, তাতে আমাদের সঙ্গে ওদের আমাদের সঙ্গে পারার কথা নয়। অবশ্য খেলাটা ক্রিকেট। যে কোন কিছু হতে পারে। তবে আমরা ছাড়বো না- মন্তব্যটা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার।
প্রথম ম্যাচে যার পারফরমেন্স ১০ ওভারে ১ মেডেন ৩৭ রানে ৪ উইকেট। ম্যাচের সেরা বোলিং পারফর্মার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা ১৫টি ওয়ানডেতে এটি তার সেরা ম্যাচ বোলিং।
একটা টার্গেট পরিকল্পনা করেই নেমেছিলাম। প্রথম ম্যাচে সেই লক্ষ্য সফল হয়েছে। ম্যাচজয়ী ইনিংস আসলে সবসময়েই বিশেষ কিছু’-ম্যাচসেরা তামিম ইকবাল।
৮৭ বলে ৫০। ১৪৬ বলে ১০০। এবং শেষপর্যন্ত ১৬০ বলে অপরাজিত ১৩০। বাউন্ডারি ১০টি। তিন ছক্কা। ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ৮১.২৫।
প্রথম ম্যাচে লক্ষ্য পুরণ। কিন্তু সিরিজের আসল টার্গেট এখনো সামনে। পরের দুই ম্যাচের একটা জিতলেই ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি বাংলাদেশের। তবে সেই সুযোগের জন্য নিজেদের বেশি অপেক্ষায় রাখতে চায় না দল। তৃতীয় ম্যাচের আগেই দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেই সিরিজের লক্ষ্য পুরো করার আত্মবিশ্বাসী পরিকল্পনা। শেষ ম্যাচটা তখন কেবল হবে আনুষ্ঠানিকতার উপলক্ষ!
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের ৪৮ রানের বড় জয় গোটা ওয়ানডে সিরিজের দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। সিরিজ শুরুর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজই ছিল ফেবারিট। এখন সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজই সিরিজ হারের শঙ্কার গর্তে! ঘুরে দাড়ানোর জন্য ক্ষমতা অবশ্য রাখেন ক্রিস গেইলরা। তবে সিরিজের বাকি সময়টায় বাংলাদেশ যেরকম নির্ভার চিত্তে থাকবে, তেমন সুবিধাটা আর পাচ্ছে না স্বাগতিকরা।
আত্মবিশ্বাস এবং নিজ পরিকল্পনার ওপর বাংলাদেশ এখন এতই আস্থাবান যে দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে কোন বদল আনার চিন্তায় নেই টিম ম্যানেজমেন্ট। এমনকি জয়ী ম্যাচে দলের যারা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের দ্বিতীয় ম্যাচেও সুযোগ দেয়া হচ্ছে। আর তাই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও মিডলঅর্ডারে সাব্বির রহমান সিরিজে নিজেদের আরেকবার প্রমাণ করার উপায় খুঁজে পাচ্ছেন। সেই একই ভেন্যুতে খেলা হচ্ছে দেখে বাংলাদেশও তাদের আগের ম্যাচ পরিকল্পনাতেই স্থির থাকছে ২৫ জুলাইয়ের গভীর রাতের দ্বিতীয় ম্যাচে। মাত্র দু’দিনে ব্যবধানে নিশ্চয় গায়ানার উইকেটের গুণাগুণ বদলে যাবে না। আর তাই সেই বিবেচনাবোধ থেকেই বাংলাদেশ এই ম্যাচেও একই একাদশ, একই পরিকল্পনা, একই ম্যাচ মেজাজ নিয়েই নামার সিদ্ধান্তে আপাত স্থির।
-আপাত কেন? কেন চুড়ান্ত নয়?
যদি ম্যাচের বৃষ্টি হয়, সেই চিন্তাও মাথায় থাকছে। তখন তো পরিকল্পনায় কিছু বদল আনতে হবে। তাছাড়া সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি হবে ফ্লাডলাইটের আলোয়। সেই আলোয় বল যদি স্কিডের সম্ভাবনা থাকে তবে বোলিং পরিকল্পনাটা হয়তো একটু অন্যরকম হবে। প্রথম ম্যাচে মুস্তাফিজকে আক্রমণে আনা হয়েছিল ২১ নম্বর ওভারে। বোলিং অর্ডারে হয়তো দ্বিতীয় ম্যাচে আরো একটু আগে দেখা যেতে পারে তাকে। অবশ্য সেটা নির্ভর করছে শুরুর স্পেলে বাংলাদেশের বোলিং কেমন হয়-তার ওপর।
গায়ানায় সিরিজে প্রথম ম্যাচের ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কখনো চ্যালেঞ্জিং মনে হয়নি। এমনকি মনেও হয়নি এই ম্যাচ তারা জিততে পারে। তবে পরের ম্যাচেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই ভঙ্গুর ব্যাটিং চেহারার চিত্র মিলবে-এমন কোন সমাধান এখনই কষে ফেললে ঠকতে হতে পারে।
ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, আন্দ্রে রাসেল, জ্যাসন মোহাম্মদ, রোমান পাওয়েল; প্রতিদিন ব্যর্থ হওয়ার মতো ক্রিকেটার কিন্তু নন!
এই বাস্তবতা মানছে বাংলাদেশও। তাই সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে থাকার আত্মবিশ্বাস ঠিকই আছে। কিন্তু আত্মতুষ্ঠি নেই। বরং থাকছে বাড়তি সতর্কতা।
টিম মিটিংয়ের জন্য এমন স্ক্রিপ্টই তৈরি করছেন অধিনায়ক!
বিপি