ওয়াসা নিয়ে নগরবাসীর অভিযোগ বিস্তর। প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে সেই অভিযোগের তালিকা। এবার প্রশ্ন উঠেছে ওয়াসার পানির চাহিদা-জোগানের হিসাব নিয়ে।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন, ওয়াসা নগরের মোট জনসংখ্যার শুধুমাত্র ১০ শতাংশ মানুষকে পানি সরবরাহ করতে পারছে না! কিন্তু খোদ ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সাম্প্রতিক কিছু পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ জয়নিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসার একমাত্র উদ্দেশ্য নগরবাসীকে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা। আমরা এই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। ২০২০ সালের মধ্যে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২) চালু হলে নিশ্চিত করে বলতে পারি নগরের প্রতিটি মানুষ নিরবচ্ছিন্নভাবে ২৪ ঘন্টা ওয়াসার পানি পাবেন।’
নগরের ৯০ শতাংশ মানুষ সরাসরি ওয়াসার সুপেয় পানি পায় দাবি করে তিনি বলেন, বাকি ১০ ভাগ মানুষের মধ্যে পরোক্ষভারে ৫ ভাগ মানুষ পানি পান অনিয়মিতভাবে। তবে বাকি ৫ ভাগ মানুষ এখনো পুরোপুরি ওয়াসার সেবা থেকে বঞ্চিত।
ফজলুল্লাহ আরো বলেন, কর্ণফুলী নদীর অপর পাড়ে অবস্থিত কাফকো, সিইউএফএল, কোরিয়ান ইপিজেড শিল্প কারখানাসহ আবাসিক এলাকায় পানির চাহিদা পূরণে বাস্তবায়নাধীন আছে ৬০ মিলিয়ন লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন ভান্ডারজুরী পানি সরবরাহ প্রকল্প। এটি শেষ হবে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে।
ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নগরীতে পানির চাহিদা ৫০ কোটি লিটার হলেও ওয়াসা জোগান দিতে পারছে ৩৬ কোটি লিটার।
এই সমস্যা সমাধানে জাইকার সঙ্গে ওয়াসার কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পটি (ফেজ-২) হাতে নেওয়া হয়েছে। জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ৪৪৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এটিই হবে চট্টগ্রাম ওয়াসার ৫৬ বছরের মধ্যে সর্ববৃহৎ প্রকল্প।
প্রকল্পের আওতায় ১৪ কোটি লিটার সক্ষমতাসম্পন্ন একটি পানি শোধনাগার নির্মাণ ছাড়াও নগরের পুরনো ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন প্রতিস্থাপন ও পুনর্বাসন করা হবে।
জানতে চাইলে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের (ফেজ-২) উপ-পরিচালক ও ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাকসুদ আলম জয়নিউজকে বলেন, তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ২০২০ সালের মধ্যে উৎপাদনে যেতে। এই প্রকল্প থেকে দৈনিক পাওয়া যাবে ১৪ কোটি লিটার পানি।
ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড শিল্প এলাকা ও মিরসরাই অর্থনৈতিক জোনের পানি সরবরাহের বিষয়ে সরকারের নির্দেশে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ স্টাডি করছে। সরকার চাইলে আগামীতে মোহরাতে আলাদা প্রকল্প করে দৈনিক ৯-১৪ কোটি লিটার পানি ওই এলাকায় সরবরাহ করা হবে।