পেকুয়ার শিলখালী ইউপি কার্যালয় থেকে বিপুল খাদ্যশস্য গায়েবের অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে ভিজিএফ তালিকাভুক্ত প্রায় ৩ শতাধিক উপকারভোগী চাল বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পরে বঞ্চিতরা চাল পাওয়ার দাবিতে খালি বস্তা নিয়ে ইউপি কার্যালয় ঘেরাও ও বিক্ষোভ করেন।
এসময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন, ইউপির সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্যসহ গ্রাম পুলিশরা ইউপি কার্যালয় থেকে সটকে পড়েন।
শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
শিলখালী ইউপি সচিব নুরুল আমিন জয়নিউজকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। দু’দিন ধরে আমি কক্সবাজারে সরকারি একটি কর্মশালায় ট্রেনিং নিচ্ছি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সারাদেশে বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের চাল বরাদ্দ দেয় সরকার।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হচ্ছিল।
কয়েকদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা উপকারভোগী তালিকা চূড়ান্ত করে। প্রতিজন উপকারভোগীর অনুকূলে ১৫ কেজি খাদ্যশস্য বিতরণ করার নিয়ম রয়েছে। ৪নং ওয়ার্ডে চাল বিতরণের সময় দেখতে পান পরিষদ কার্যালয়ে চালের মজুদ নেই।
এ খবর প্রচার হলে চাল নিতে আসা দুই শতাধিক উপকারভোগী চালের জন্য জড়ো হন। চাল না থাকায় তারা হট্টগোল শুরু করেন।
শিলখালী ইউপি সদস্য শাহাব উদ্দিন জয়নিউজকে জানায়, আমি চাল বরাদ্দ পেয়েছি দেড়শ উপকারভোগীর জন্য। এসময় মজুদ না থাকায় কাউকে চাল দিতে পারিনি। আমার ওয়ার্ডে আমি আর মহিলা মেম্বার মিলে দুইশ উপকারভোগী চূড়ান্ত করেছি। তবে কেউ চাল পাননি।
একই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবদু ছমদ জয়নিউজকে জানান, আমার ওয়ার্ডেও কিছু অসঙ্গতি হয়েছে। ২০ থেকে ৩০ জন চাল না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
শিলখালীর ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহাব উদ্দিন, ছরওয়ার উদ্দিন, তাজ উদ্দিন, মনছুর আলম, ছালেহ আহমদ, আবদু ছালাম, হাসিনা বেগম, মরিয়ম খাতুনসহ চাল নিতে আসা ভিজিএফ তালিকাভুক্তরা জানান, আমরা সকাল থেকে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে পরিষদে অবস্থান করছি। তারা চাল চুরি করে নিয়ে গেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কালু বাবুর্চি জয়নিউজকে বলেন, চাল লোপাট হয়েছে। সাধারণ মানুষের চাল কারা পাচার করছে এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। চেয়ারম্যান পালিয়েছে। ফোন পর্যন্ত রিসিভ করেনি। মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগের বিষয়ে শিলখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন জয়নিউজকে বলেন, কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে এতগুলো লোক চাল না পেয়ে ফেরত যাওয়ার কথা মোটেই ঠিক না। মেম্বারদের দায়িত্ব দিয়ে আমি একটু বিশ্রামে গিয়েছিলাম।
অপরদিকে উক্ত ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার অনুপস্থিত ছিলেন।
পেকুয়ার ইউএনও মাহাবুব উল করিম জয়নিউজকে বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমি কথা বলছি। কেন উপকারভোগীরা চাল না পেয়ে বাড়িতে ফিরল এর কারণ খুঁজে বের করা হবে।